হজের ভাড়া কমাতে চিঠি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের, ‘সুযোগ নেই’ বিমানের

হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে বাংলাদেশের সরকারি বিমান পরিষেবা সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, চলতি বছর ভাড়া কমানোর সুযোগ নেই।

বুধবার (১৫ মার্চ) হজের বিমান ভাড়া দেড় লাখ টাকা করার সুপারিশ করে বেসামরিক বিমান ও‌ পযটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তবে পরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম জানান, চলতি বছর হজের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৮ হাজার থেকে কমানোর সুযোগ নেই।

তার এ জবাবের পর বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফের বিমান ভাড়া কমাতে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়। উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীনের সই করা এক চিঠিতে জানানো হয় এই অনুরোধ।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে হজযাত্রী, হজ এজেন্সি এবং পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিনিয়তই ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসছে।

বিমান ভাড়া অতিরিক্ত হওয়ায় এ বছর হজযাত্রী নিবন্ধনও সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করা হয়েছে এবং গত ১৪ ও ১৫ মার্চ ওই পিটিশনের ওপর শুনানিও হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকেও বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে মত প্রকাশ করা হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়, ১৫ মার্চ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অনুষ্ঠিত সভায় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উপস্থিতিতে বিমান ভাড়া কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের হজযাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে হজ পালনের স্বার্থে বিমান ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে কমানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এদিকে গতকাল বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে হজের বিমান ভাড়া দেড় লাখ করার সুপারিশ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা মিথ্যা বলেও দাবি করেছেন বিমানের এমডি।

তিনি বলেন, ‘গতকাল বৈঠকে আমিও ছিলাম। সেখানে আলোচনা হয়েছে যে হজ প্যাকেজের কোনো খরচ ও বিমান ভাড়া কমানোর সুযোগ আছে কি না এবং হজযাত্রীদের আরও কিছু কমফোর্ট (ছাড়) দেওয়া যায় কি না। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে দেড় লাখ বা এ ধরনের কোনো শব্দ উচ্চারণ বা সুপারিশ করা হয়নি।’

শফিউল আজিম বলেন, হজের ১৬টি খরচের খাত রয়েছে। তার মধ্যে বিমান ভাড়া মাত্র একটি খাত। এ ছাড়াও বিমান হজের দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করেছিল। পরে সবার সঙ্গে বৈঠক করে এক লাখ ৯৮ হাজারে নামানো হয়। সে সময় আমরা ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট ১০৬ টাকা ধরে ভাড়া নির্ধারণ করেছি। এর মধ্যে যদি ডলারের দাম বাড়ে আমাদের ভাড়া আরও বেড়ে যাওয়ার কথা। তবে আমাদের ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকাই নিতে হবে। হজ ফ্লাইটের পুরো ভাড়া বিমান নিচ্ছে না। এর মধ্যে ১২ হাজার টাকা ট্যাক্স রয়েছে। এগুলো বাদ দিয়ে টিকিট প্রতি বিমান ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৮২ হাজার টাকা পাবে।

‘আমরা যে ভাড়া ধরেছি তা সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেশনের মাধ্যমে করা হয়েছে। তাছাড়া দুই লাখ ১০ হাজার টাকার ভাড়া কমিয়ে এক লাখ ৯৮ হাজার করা হয়েছে। আর কমানো যায় না। হজের ক্ষেত্রে যাত্রীদের জন্য সর্বোচ্চ কনসিডার করে বিমান।’

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.