‘সংকল্প ঢাকা সামিট ২০২৩’ র ১ম সংস্করণ আয়োজনের ঘোষণা

বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে উন্নত করার লক্ষ্যে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রভাব নিয়ে একটি দিনব্যাপী “সংকল্প ঢাকা সামিট ২০২৩” শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।

আগামী (১৯ মার্চ) রাজধানী ঢাকার শেরাটন হোটেলে ২০০ টিরও বেশি অগ্রগামী স্টার্টআপ এবং চেঞ্জমেকারদের নিয়ে এই আয়োজনটি করা হবে।

ইন্টেলক্যাপ এবং আবিষ্কার গ্রুপ দ্বারা যৌথভাবে আয়োজিত গ্লোবাল সাউথের বৃহত্তম সম্মেলন, সংকল্প ঢাকা সামিট ২০২৩ এ ৪০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক এবং ২০০ জনের মত স্থানীয় আলোচক, উদ্যোক্তা এবিং বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ১২ টি সেশনে বিভক্ত এই দিনব্যাপী সামিটে উদ্যোক্তাদের কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তাদের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি, কি কি করণীয় এবং ভবিষ্যতে ক্রমশ পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য করণীয় বিষয়ে বক্তারা আলোচনা করবেন।

‘ক্যাটালাইজিং বাংলাদেশ’স এন্ট্রোপ্রেনিউরাল ইকোসিস্টেম’-থিম নিয়ে এ সম্মেলনে এই অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং পরিবেশ বান্ধব গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন, জলবায়ু সহনশীল কৃষিকাজ, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি(রিনিউয়েবল এনার্জি), লিঙ্গবৈষম্য এবং জীবিকা, বর্জ্যমুক্ত শহর তৈরিতে করণীয় এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার মতো বিষয়ে সমালোচনামূলক আলোচনা করা হবে।

উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি, পলিসিমেকিং এ সংযুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বৈশ্বিক নেতাদের অংশগ্রহণ এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অন্তর্দৃষ্টি, মাস্টার ক্লাসের মাধ্যমে শেখার সেশন, প্যানেল ডিসকাশন এবং উদ্যোক্তাদের সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং নিজের লক্ষ্যের বাইরে ভবিষ্যতের কল্পনা করতে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি উদ্যোক্তা-বিনিয়োগকারী লাইভ ডিল রুম থাকবে।

ইন্টেলক্যাপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়েশ ভাটিয়ার মতে, “স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ এর যাত্রায় যোগদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আহ্বান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে, সংকল্প ঢাকা ২০২৩ একটি প্রাণবন্ত এন্টারপ্রাইজ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য তিনটি মূল উপাদান নিয়ে আলোচনা করবে- ক্যাপিটাল, টেকনোলজি এবং ক্যাপাসিটি। ইন্টেলক্যাপ থেকে বাংলাদেশের জন্য একটি টেকসই অর্থনৈতিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক এজেন্ডা চালানোর লক্ষ্যে পরিমাপযোগ্য অবদান রাখার জন্য উদ্যোক্তাদের মনোভাবকে উৎসাহিত করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমাদের বৈশ্বিক দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চাই। ”

স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেন, “স্টার্টআপ বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য হল একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম তৈরিতে সহায়তা করা, যেখানে বিনিয়োগকারী, স্টার্টআপ, সরকার ও একাডেমিয়ারা টেকসই উদ্ভাবন এবং সার্কুলার অর্থনীতিতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে একসাথে কাজ করতে পারে৷ আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি একটি বৃত্তাকার অর্থনীতি তৈরি করার জন্য। এমন স্টার্টআপগুলি খোঁজা হচ্ছে, যারা সম্পদকে আরও টেকসই এবং দক্ষভাবে ব্যবহার করছে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে অবদান রাখতে পারবে। সংকল্প ঢাকা সামিট ২০২৩ এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে, স্টার্টআপ বাংলাদেশ প্রোগ্রামটি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। যেন দেশি স্টার্টআপগুলিকে আর্থিক এবং কৌশলগত সহায়তা প্রদান করতে পারে, যা স্টার্টআপগুলিকে তাদের পরিধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে, যা দেশের সামগ্রিক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের বিকাশে অবদান রাখবে।”

সার্কুলার অ্যাপারেল ইনোভেশন ফ্যাক্টরি (CAIF),ইন্টেলক্যাপ’র একটি উদ্যোগ, সংকল্প সামিটে টেক্সটাইল এবং পোশাকের মূল্য শৃঙ্খল জুড়ে স্টেকহোল্ডারদের তাদের বৃহত্তম সম্মেলন আয়োজন করবে। CAIF’র পরিচালক ভেঙ্কট কোটামারাজু বলেন, “২০২২ সালে বাংলাদেশে CAIF’র সম্প্রসারণের ফলে, আমরা বাংলাদেশে চতুর্থ CAIF কনক্লেভের আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত। বাংলাদেশে গার্মেন্টস শিল্প ইতিমধ্যেই অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশের স্মার্ট ভিশন ২০৪১ অর্জনে এই সেক্টর থেকেই প্রতিনিধিরা নেতৃত্ব দিবে। আরএমজি ভ্যালু চেইন জুড়ে নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বরের পাশাপাশি, আমরা গ্রীন ইনোভেশন ত্বরান্বিত করার জন্য একটি সমন্বিত ঐক্যজোট গঠন করার লক্ষ্য রাখি। আশা করা জচ্ছে এটি বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও উন্নীত করবে। এর জন্য, আমরা ইনভেস্টমেন্ট, জ্ঞান, নেটওয়ার্ক এবং প্রযুক্তিকে একত্রিত করার মাধ্যমে আমাদের বৈশ্বিকভাবেপরীক্ষিত ইকোসিস্টেম উন্নয়নের পদ্ধতির ব্যবহার করব যাতে পৃথিবী এবং মানুষ উভয়েরই উপকার হয়”।

সংকল্প সামিটে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (বাংলাদেশ), স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ অ্যাঞ্জেলস নেটওয়ার্ক, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি), ডোয়েন ফাউন্ডেশন, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ, আদিত্য বিরলা ফ্যাশন অ্যান্ড রিটেইল লিমিটেড (এবিএফআরএল) এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (GAIN) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোলডাররা অংশগ্রহণ করবেন, যারা প্রত্যেকেই এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করার জন্য একত্রিত হচ্ছেন এবং যার যার নির্দিষ্ট সেক্টর নিয়ে কাজ করবেন।

ইউসিবি পিএলসি (বাংলাদেশ), সংকল্প সামিটের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক, উদ্যোক্তাদের মনোভাবকে সমর্থন করা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য উদ্ভাবনকে সক্ষম করা এবং লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় ও ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে ক্ষমতায়নের দিকে নজর দেবে।

ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (ইউসিবি পিএলসি এবং একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিম আলমগীর বলেন “বাংলাদেশে আমাদের প্রভাবশালী কাজের কেন্দ্রবিন্দু হলো অর্থনীতি গড়ে তোলা। সংকল্প ঢাকা সামিট হল প্রতিশ্রুতিশীল উদ্যোগগুলির সঙ্গে দেখা করা, সহযোগিতা, উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগকে উদ্দীপিত করার জন্য যা প্রয়োজন তা নিয়ে কথা বলার এবং টেকসই সমাধানগুলি প্রদর্শন করার একটি দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম। আমি আশা করি যে এই সম্মেলনে করা অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাস্তব, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং রূপান্তরমূলক প্রভাবের বিকাশের দিকে বাংলাদেশী উদ্যোগদের ধাবিত করা সম্ভব হবে।”

সংকল্প ঢাকা সামিটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল “সংকল্প ঢাকা অ্যাওয়ার্ডস” যার লক্ষ্য বাংলাদেশের সেরা, ইনোভেটিভ এবং যোগ্য উদ্যোগগুলোকে স্বীকৃত এবং পুরস্কৃত করা। গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব খাত থেকে সাতজন ফাইনালিস্ট তাদের উদ্যোগ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতাদের সমন্বয়ে একটি জুরি প্যানেলে উপস্থাপন করবেন এবং তিনজন তাদের অসামান্য উদ্যোগ এর জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুরষ্কার জিতে সামিটে তাদের যাত্রা তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।

অর্থসূচক/এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.