গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ফ্রেডির দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার কয়েকটি দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ মোজাম্বিকেও।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রবল বৃষ্টি ও মাটি ধসে এখন পর্যন্ত মালউইয়ে ২০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মালাউইয়ের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ব্লানটায়ারে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ডজনখানেক শিশুও রয়েছে।
মেডিক্যাল দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, হাসপাতালে পৌঁছানোর পর ৪০ জনেরও বেশি শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবারের ঘূর্ণিঝড়ে।
টানা ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের জেরে বেশ কিছু এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে বিকল হয়ে পড়েছে মালাউইয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। দেশের বেশিরভাগ অংশে দীর্ঘস্থায়ী ব্ল্যাকআউট হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া এলাকাগুলোতে কলেরা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ সংস্থাগুলো। দেশটির সরকার দক্ষিণের ১০টি জেলায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির ঘোষণা দিয়েছে।
উদ্ধারকর্মীরা কাদায় চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ কাজের জন্য তারা বেলচাও ব্যবহার করছেন। রাস্তা ও সেতু ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারি বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের কারণে হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা যাচ্ছে না উদ্ধার কাজের জন্য।
পুলিশের মুখপাত্র পিটার কালায়া বিবিসিকে বলেন, ‘নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানিতে ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, জীব-জন্তুসহ সরঞ্জামাদি। ভবন ধসে পড়ছে।’
দেশটির সরকার হাজার হাজার অসহায় মানুষের জন্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা বলছে, ফ্রেডি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে উৎপত্তি হয়। এটি রেকর্ডে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় বলে মনে করা হয়। সমগ্র দক্ষিণ ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে এই ঝড়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মোজাম্বিকে পৌঁছানোর আগে, ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদাগাস্কারে তাণ্ডব চালায় এই ঝড়।
ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির কারণে প্রতিবেশী দেশ মোজাম্বিকেও মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়কে আরও তীব্র করে তুলছে।
সূত্র: বিবিসি



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.