চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এক সময় দেশের বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক থেকেই এন্টিবায়োটিক দেয়া হতো। কিন্তু এখন তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়।’
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলোজি ডিপার্টমেন্ট অব ইনিওস ইনস্টিটিউটের এন্টিমাইক্রোবাইয়াল রিসার্চের পরিচালক প্রফেসর টিমোথি ই ওয়ালশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তাঁর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমের কাছে ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ‘চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।
এন্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সবস্থানেই এন্টিবয়োটিকের বিক্রি বন্ধ নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
টিমোথি ই ওয়ালশ বলেন, এন্টি-মাইক্রোবিয়াল রেস্টিস্ট্যান্স (এএমআর) এখন বিশ্বে একটি মহামারী আকারে আবির্ভূত হয়েছে। এখনই যদি এটা বন্ধ করা না হয়- তবে ভবিষ্যতে এটা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রফেসর আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এর কারণে লাখো মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।’ এ সময় তিনি এএমআর বিষয়ক গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধী, ক্যান্সার ও নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের মতো বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ দেশের স্বাস্থ্য-খাতে সার্বিক উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার কৃষি, মৌলিক বিজ্ঞান ও ওষুধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের ব্যাপারে তিনি বলেন, বৃত্তি-উপবৃত্তি দেয়ার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা- বিশেষত পিএইচডি, পোস্ট-ডক্টরাল ও গবেষণা ক্ষেত্রের জন্য ২০০টি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে।
বৈঠককালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক ইনিওস ইনস্টিটিউট অব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রিসার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু-আইওআই ফেলোশিপের অধীনে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও মৌলিক বিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণার জন্য স্কলারশিপ প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন। এর জবাবে, প্রধানমন্ত্রী নীতিগতভাবে এই ফেলোশিপের ব্যাপারে তাঁর সম্মতি প্রকাশ করেন।
এছাড়াও, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ককাসের সঙ্গে এএমআর বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অংশীদারিত্বের একটি প্রস্তাবও দেন টিমোথি ই ওয়ালশ এবং প্রধানমন্ত্রী এতে ইতিবাচক সাড়া দেন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.