ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়াদের উদ্ধার করছে কয়লাখনির শ্রমিকরা

৪৭ বছর বয়সী ইরহান আক্কাস একজন কয়লাখনির শ্রমিক। সামান্য বেতনে কাজ করা এই শ্রমিকের জীবন পাল্টে গেছে ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর। ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে দেশটির বহু মানুষ। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আনার জন্য সাড়া দেওয়া প্রথম সারির লোকজনের মধ্যে তিনি একজন।

প্রতিদিন উদ্ধার কাজের পোশাক পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধার করাই এখন তার রুটিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত অনেককে জীবিত উদ্ধার করেছেন ইরহান। এরপর থেকে প্রশংসায় ভাসছেন ইরহানসহ দেশটির কয়লাখনির শ্রমিকরা।

এদিকে তুরস্কের দক্ষিণের হাতায় প্রদেশের কেন্দ্রীয় জেলা আন্তাকায় উদ্ধার কাজে অংশ নেন ইরহান। দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কয়লাখনির দুশো শ্রমিকের মধ্যে আক্কাস একজন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি হাতায় পৌঁছান অন্যরাসহ। আরও ৭৪ জন শ্রমিকসহ ইরহান রোনেসান রেজিডানস নামে পরিচিত ক্ষতিগ্রস্ত বহুতল জোড়া ভবনে বেঁচে থাকা লোকদের সন্ধান করার কাজে যুক্ত হন।

তিনি জানান, ‘আমরা হাত দিয়ে মাটি খুঁড়ে মানুষগুলোকে বের করেছি। আমাদের কাছে বিশেষ সরঞ্জামও ছিল না।’

আক্কাস ও তার সহকর্মীরা যে কাজটি শুরু করেছিলেন তা একটি কঠিন উদ্ধার অভিযান। জোড়া ভবনের নিচতলা ভেঙে পড়ার কারণে একটি ভবন ৪৫ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়ে। ভেতর থেকে লোকজনের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলেন তারা। ওই ভবনটির ধসে পড়ার শঙ্কা থাকলেও জীবন বাজি রেখে উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়েন তারা।

আক্কাস ও তার সহযোগী খনি শ্রমিকরা তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় মানিসা প্রদেশে সোমা খনিতে কাজ করেন। সেই অভিজ্ঞতাকে উদ্ধারের সময় কাজে লাগান তারা।

সর্বশেষ তথ্য পাওয়া পর্যন্ত তুরস্কে এখন নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজারের কাছাকাছি। আরও নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার আটশ জনে।

এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে যখন মানুষজন ঘুমিয়ে ছিলেন ঠিক তখনই আঘাত হানে এই ভূমিকম্প। মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, সেদিন স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। এরপর আঘাত হানে আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতেই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয় তুরস্ক ও সিরিয়ায়।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.