রিজার্ভের ব্যাপক পতন ঠেকালো আমদানি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে শুরু হয় বাণিজ্যিক অস্থিরতা। দেশে তৈরি হয় ব্যাপক ডলার সংকট। এরপরেই আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এলসি খোলার পরিমাণ ছিলো ৫২ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। কড়াকড়ির ফলে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এলসি খোলা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের। অর্থাৎ সাত মাসে এলসি খোলা কমেছে ১৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সদ্য বিদায়ী ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এপ্রিলে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ৪৪ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাড়িয়েছিলো ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। আমদানি কড়াকড়ির কারণে সাত মাসে আমদানি খরচ কমে ১৩ বিলয়ন ডলার। আমদানির পরিমাণ না কমলে জানুয়ারি শেষে রিজার্ভ দাড়াতো ১৯ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ক্যাপিটাল মেশিনারির এলসি ওপেনিং হয়েছে ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া চলতি অর্থবছরের এই সাত মাসে ইন্টারমিডিয়েট গুডস ও ভোগ্যপণ্যের আমদানির পরিমাণ কমেছে যথাক্রমে ৩৩ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ। আলোচিত এই সময়ে দুই খাতে আমদানি হয়েছে ৩ বিলিয়ন ও ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশিল রাখতে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর একের পর এক নির্দেশনা জারি করে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এছাড়া গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম আমদানিতে ২৫ শতাংশ নগদ মার্জিনের ঘোষণা আসে। এরপর কয়েকবার বাড়িয়ে গত অর্থবছরের শেষে অর্থাৎ জুন মাসে ২৭ ধরণের পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ মার্জিন করা হয়। এছাড়া আমদানি এলসি মূল্য ৩ মিলিয়ন ডলার বা তার বেশি হলেই এলসি খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেমের (ওআইএমএস) মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়।

বিশেষ বিবেচনায় ৮ হাজার কোটি টাকা ধার চায় ইসলামী ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এলসি খোলার সঙ্গে এলসি সেটেলমেন্টের পরিমাণও কমেছে। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে এলসি সেটেলমেন্ট হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে। দীর্ঘ দুই বছর আমদানি বন্ধ থাকায় করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আমদানি বেড়েছিলো। এছাড়া নতুন করে আগের ডেপার্ড পেমেন্টও করতে হয়েছে। তার কারণে আলোচিত এই সময়ে এলসি সেটেলমেন্ট অনেক বেশি ছিল।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.