তুরস্ক-সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজার ছুঁইছুঁই

ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার ছুঁইছুঁই। শুধু তুরস্কেই প্রায় ৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে নিহতের এই সংখ্যা তুলে ধরেছে।

দুই দেশের কর্তৃপক্ষের বরাতে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৮৯৪ জন। অন্যদিকে তুরস্কের প্রতিবেশী সিরিয়ায় নিহত দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩২ জন। সিরিয়ায় নিহতদের বেশিরভাগই বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান ১০টি রাজ্যকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ঐসব এলাকায় তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন৷

এদিকে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ কয়েক হাজার বাড়ি, হাসপাতাল ও স্কুল ভেঙে পড়েছে৷ হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন৷ প্রচণ্ড শীতে তারা কষ্ট পাচ্ছেন৷ কিছু এলাকায় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নেই৷ তীব্র ঠান্ডা, দুর্বল ইন্টারনেট ও রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে৷ ধসে যাওয়া ভবনের নীচ থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন নিহত মানুষের সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছাতে পারে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ আফাদ জানিয়েছে, কমপক্ষে ২ হাজার ৮৩৪টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ান্তেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে শতাধিক আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।

তুরস্কে প্রায় এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষের উপর ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে৷ দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা আফাদ জানিয়েছে, পাঁচ হাজার ৭৭৫টি ভবন ধ্বংস হয়েছে৷ ভূমিকম্পের পর ২৮৫টি ‘আফটারশক’ হয়েছে৷

ইউনিসেফ মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, ভূমিকম্পে কয়েক হাজার শিশু মারা গিয়ে থাকতে পারে৷

এখনও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া না গেলেও ‘আমরা জানি অনেক স্কুল, হাসপাতাল ও অন্যান্য মেডিকেল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’৷ উত্তর-পশ্চিম সিরিয়া ও তুরস্কে থাকা সিরীয় শরণার্থীরা বেশি অসহায় অবস্থায় আছেন বলেও জানান তিনি৷

সোমবার ভোর ৪টা ১৫ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়েছে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কম্পন অনুভূত হয়েছে মিশর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পার্সটুডে, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.