বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় কমেছে

করোনার পরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিলো বিশ্ব অর্থনীতি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আবার তৈরি হয় অস্থিরতা। অর্থনৈতিক এই সংকটের মধ্যে বৈদেশিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ ও অর্থ সহায়তা কম পাচ্ছে সরকার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সরকার বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ ও সহায়তা বাবদ ৩৭৮ কোটি ৫ লাখ ডলার পেয়েছে, যা গত অর্থবছর একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৯ কোটি ডলার কম। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে এ খাতে এসেছিল প্রায় ৪১৭ কোটি ডলার।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত বৈদেশিক সহায়তাবিষয়ক মাসিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ি, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে খাদ্য এবং প্রকল্প সহায়তা বাবদ বৈদেশিক অনুদানের অর্থছাড় গত অর্থবছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। তবে এসময়ে ঋণের অর্থছাড় অনেকটা কম হয়েছে। প্রথম ৬ মাসে অনুদানের অর্থছাড় হয়েছে প্রায় ২১ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছর একই সময়ে ছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলার। আর ঋণের অর্থছাড় হয়েছে ৩৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের ছিল ৪০২ কোটি ৫২ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবেছরের প্রথম ৬ মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় হয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে। তাদের কাছ থেকে এসেছে ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার। এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থছাড় করেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। তাদের কাছ থেকে এসেছে ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) কাছ থেকে এসেছে ৫৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। চীন থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। রাশিয়া থেকে অর্থছাড় হয়েছে ৪৪ কোটি ডলার, ভারত দিয়েছে ১৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। এছাড়া অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এসময়ে অর্থছাড় হয়েছে ৩৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতিও কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। এসময় বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ ১৭৬ কোট ২২ লাখ ডলার। অথচ এর আগের বছরের একই সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল প্রায় ৪৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় প্রতিশ্রতি কমেছে ৬০ শতাংশ।

অন্যদিকে এসময়ে ঋণ পরিশোধের চাপও বাড়ছে। আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ১০৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। ডলারে পরিশোধের পরিমাণ মাত্র ১ কোটির একটু বেশি হলেও টাকার হিসাবে পরিমাণটি তুলনামূলক বেশি। ডলারের দাম বাড়ায় ১ হাজার ২৬১ কোটির বেশি টাকা খরচ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা টাকার বেশি। গত বছর একই সময়ে ৮ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকার বেশি।

অর্থসূচক/এমএইচ

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.