ঋণের লাগাম টানতে ন্যাশনাল ব্যাংকে নিষেধাজ্ঞা

নানা অনিয়মের কারণে দুই বছর ধরে ব্যাপক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে বেসরকারি খাতের এই ব্যাংটিতে  সংকট তৈরি হয়েছে। এবার ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের লাগাম টানতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটির ১০ কোটি টাকার বেশি অঙ্কের ঋণ বিতরণ বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

রোববার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতের ব্যাংকটিকে এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত চলতি মূলধন, এসএমই ও ভোক্তা ঋণ, কৃষি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় ঋণ বিতরণ ছাড়া অন্য কোনো ঋণ দেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে ঋণপত্র খুলতে হলে গ্রাহকের কাছ থেকে পুরো টাকা আগে জমা নিতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, আগে অনুমোদন হওয়া ঋণের অর্থের ১০ কোটি টাকার বেশি বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। আগের ঋণের বকেয়া অর্থ নগদ আদায় ছাড়া ওই ঋণ নবায়ন করা যাবে না। একইসঙ্গে অন্য ব্যাংকের কোনো ঋণ অধিগ্রহণ করা যাবে না বলেও উল্লেখ করা হয়।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক অর্থসূচককে বলেন, নির্দেশনার বিষয়ে ন্যাংশনাল ব্যাংকের বর্তমান আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে লেনদেন-সহ সবকিছু মিলিয়ে আমরা মনে করেছি বড় ঋণ দেওয়া থেকে ব্যাংকটির বিরত থাকা উচিৎ। তবে এতে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ ঋণ কম দিলে ব্যাংকের লিকুইডিটি ভালো হবে। লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় সতর্ক থাকে।

এদিকে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মেহমুদ হোসেন পদত্যাগপত্র জমা দেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি এই ব্যাংকটি থেকে পদত্যাগ করেন। তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ দাড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকায়। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাতের হার ৯২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার চেয়ে প্রায় ৬ শতাংশ বেশি।

অর্থসূচক/সুলাইমান/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.