পুঁজিবাজারে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি অর্থসূচক পত্রিকাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তারা অনেক সুন্দর একটি আয়োজন করেছে। পুঁজিবাজারকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারী-সহ বাজারের সকল স্টক হোল্ডারদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ নির্ভরযোগ্য সংবাদ পরিবেশন করছে অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো। আয়োজনটি সত্যিই প্রশংসনীয়।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো -২০২৩ এর সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার এক্সপোর মাধ্যমে সবার মাঝে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। এছাড়া এক্সপো চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সেমিনারের বিশেষজ্ঞ মতামতে নীতি নির্ধারণ ও বাজার পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এছাড়া সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি সাইফুর রহমান মজুমদার এবং সিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি গোলাম ফারুক।

এছাড়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থসূচক সম্পাদক জিয়াউর রহমান।

বিশেষ অতিথি ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ পুঁজিবাজারে ব্লু বন্ড নিয়ে আসার জন্য আন্তরিকভাবে আমরা কাজ করছি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড.শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো -২০২৩ এর সমাপনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অনেক সুযোগ রয়েছে। বর্তমানেও বাজার অনেক ভালো আছে। এখন শেয়ার কেনার সময়। মূল বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার সময় লাভবান হয়। বিআইসিএম এবং বিএএসএম-সহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ছাড়া এই বিশেষায়িত বাজারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে বিও অ্যাকাউন্ট সহ সবকিছু অনলাইনে করা যায়। আমরা প্রতি জেলায় বিনিয়োগকারীদের নিয়ে স্পেশাল সেশন করি। আমরা বর্তমানে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ২৫ এর মধ্যে চলে আসবে। মানুষের মধ্যে বিশ্বাস আছে যে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তাই ব্যাংকগুলোতে এখনো অনেক প্রজেক্টের অফার আসে। দেশের গার্মেন্টস শিল্পে ৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসবে।

এছাড়াও তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে আসতে চাইলে কোম্পানিগুলো কিছু সুবিধা চায়। বিশেষ করে রাজস্ব সুবিধা চায় তারা। আমরা রিয়েল স্টেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড গঠন করতে যাচ্ছি। এবিষয়ে আইন তৈরির কাজ চলছে। এছাড়া টেকনোলজির উন্নয়নে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে এসএমই ও এটিবি সহ আরও কিছু বোর্ড চালু করেছি। এছাড়াও আরও অনেকগুলো পরিকল্পনা রয়েছে। আগামীতে নতুন অনেক প্রোডাক্ট আসবে। ভবিষ্যতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ লাগবে তা ব্যাংক দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব না। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

এদিন গোলাম ফারুক বলেন, যে দেশের মানুষ যত বেশি সঞ্চয় করে তারা ততো বেশি উন্নত। প্রতি বছর মূল্যস্ফীতি বাড়ে। তাই টাকা ঘরে রাখলে এর পরিমাণ কমতে থাকে। এছাড়া লোন করে শেয়ার ব্যবসা করা উচিৎ না। ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করলে লাভ করা সম্ভব হয়। বিএসইসি অনেক ভালো-ভালো কোম্পানি নিয়ে আসছে। কমোডিটি ও এটিবি বোর্ডসহ আরও কিছু নতুন পদ্ধতি নিয়ে আসছে। তাই ভবিষ্যতে পুঁজিবাজার এই অবস্থায় থাকবে না। এছাড়া বাজারে পজিশন নিতে হবে। অনেকে বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও পজিশন নিয়ে আছে। এছাড়া ইটিএফ পাস হয়েছে। এখানে পেইড আপ ক্যাপিটাল বাড়ানো ও কমানো সম্ভব হবে। ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ডে ট্রেডার হলে লসের পরিমাণ বেশি হবে। তাই বিনিয়োগকারী হলে কখনো লোকসান হবে না।

সাইফুর রহমান বলেন, বর্তমান এই পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থসূচক এ ধরনের মেলার আয়োজন করায় আমি ধন্যবাদ জানাই। অর্থসূচক এর আগেও ৪বার এই আয়োজন করেছে। তখনও বিনিয়োগকারীরা মেলায় বেশ আগ্রহ নিয়ে এসেছিলো। বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি একটু খারাপ। বাজারে সচেতনতা বাড়াতে এই মেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে নিয়েই পুঁজিবাজার। স্বাধীনতার পরবর্তী বাজার ও বর্তমান বাজারের আকৃতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। একইসঙ্গে অর্থনীতির আকারও বেড়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছি। বাজারের অবকাঠামোখাত ও বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে। সবকিছুই নিয়েই বাজার কাঠামো তৈরি হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কৌশল জানার কোনো বিকল্প নেই। বিনিয়োগ শিক্ষা সবারই জানা দরকার। যার যার জায়গা থেকে কৌশল নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুঁজিবাজার ইক্যুইটি ভিত্তিক মার্কেট। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাজারের ক্যাপাসিটি দ্বিগুণ করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অর্থসূচকের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারকে আগে অনেকে ক্যাসিনো মনে করতো। তবে বিনিয়োগ শিক্ষা বাড়ানোর ফলে এখন মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়েছে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে আমরা এই বাজারের উন্নয়ন দেখবো। পুঁজিবাজার ভবিষ্যতে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.