আফগানিস্তানে মেয়েদের প্রতিবাদ, কান্না

জাতিসংঘের দাবি, সিদ্ধান্ত বদল করতে হবে। একের পর এক দেশ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমেরিকা হুমকি দিয়েছে। তা সত্ত্বেও বুধবার থেকে আফগানিস্তানে মেয়েদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। বুধবার মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেছিলেন, কিন্তু তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। রক্ষীদের উপর কড়া নির্দেশ ছিল, বিনা অনুমতিতে কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না।

বুধবার স্নাতক হওয়া কিছু মেয়েদের ডিগ্রি দেয়ার অনুষ্ঠান ছিল। সেটা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণে কিছু মেয়েকে অফিস পর্যন্ত যেতে দেয়া হয়েছে। বাকিদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। তারা বাইরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। স্বপ্নপূরণ হবে না বলে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

২৩ বছর বয়সি নার্সিং পাঠরত এক নারী সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, ‘আমার নিজেকে খাঁচায় বন্দি পাখির মতো মনে হচ্ছে। আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরছি, কাঁদছি, আর প্রশ্ন করছি, কেন শুধু আমাদের সঙ্গে এমন হবে?’

মেয়েদের জন্য যাবতীয় পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই প্রস্তুতি শোকে পরিণত হয়েছে। আমি আর পড়তে পারব না। আমার স্বপ্নপূরণ হবে না। মনে হচ্ছে, মেয়েদের জীবন্ত কবর দেয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামনে প্রচুর নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে সেখানে বা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ কম হচ্ছে। বরং আফগানিস্তানের মানুষ সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ফেসবুক ও টুইটারে হ্যাশট্যাগ লেটহারলার্ন ভাইরাল হয়েছে।

এক শিক্ষার্থী জানান, তিনি ভোর সাড়ে ছয়টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যান। ছাত্রদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছিল। ছাত্রীদের দেখলেই বন্দুক তুলে বলা হচ্ছিল, বাড়ি যাও। ফেসবুকে হাদিয়া লিখেছেন, এরপর মেয়েদের বাড়ির বাইরে রাস্তাতেও নামতে দেয়া হবে না।

জাতিসংঘ দাবি জানিয়েছে, অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। আর মেয়েদের জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে স্কুল খুলতে হবে।

মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, তালেবানকে এর ফল ভুগতে হবে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশই মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, এটা পিছনের দিকে যাওয়ার একটা উদাহরণ। সূত্র: ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.