বাংলাদেশে দূতাবাস চালুর ঘোষণা আর্জেন্টিনার

১৯৭৮ সালে বন্ধ হওয়ার পর আবারও বাংলাদেশে দূতাবাস খোলার ঘোষণা দিয়েছে আর্জেন্টিনা। দেশটির রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। এদিকে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকাতে আর্জেন্টিনার দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ব্রাজিলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

আর্জেন্টিনার নিকটতম ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, ফিফা বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি ও জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর জবাবে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজ প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস স্থাপনের ঘোষণা দেন।

দূতাবাস স্থাপনের মাধ্যমে দুই দেশের জনগণ ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির দৃঢ়বন্ধনে আবদ্ধ হবে বলে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আর্জেন্টাইন ফুটবলের বিশ্বজয়ে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণোচ্ছল উদযাপনে আর্জেন্টিনার জনগণ ও রাষ্ট্রপতি অভিভূত হয়েছেন। আলবার্তো বলেন, খেলাধুলা মানুষের মধ্যে বন্ধন ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির একটি অর্থবহ ও শক্তিশালী মাধ্যম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আর্জেন্টিনা ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের পর দুই দেশের সরকারপ্রধানের শুভেচ্ছাবার্তা বিনিময় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফসল। এটি দক্ষিণ আমেরিকাতে বাংলাদেশের একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য।

ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস চালু হলে দক্ষিণ আমেরিকাতে বাংলাদেশের বাণিজ্য-বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সয়াবিন উৎপাদক দেশ আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন তেল আমদানি সহজতর হবে। সেই সঙ্গে মারকসুরের বাণিজ্য-বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশ বেগবান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর এক টুইট বার্তায় আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো ক্যাফিরো বাংলাদেশে পুনরায় দূতাবাস চালু করার পরিকল্পনার কথা জানান। স্প্যানিশ ভাষায় করা কাফিয়েরোর ওই টুইট বার্তায় তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে তার একটি ছবিও জুড়ে দেন।

কাতার বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসির গোলের পর উল্লাসরত বাংলাদেশি সমর্থকদের একটি ভিডিও ফিফার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করার পর তা বহির্বিশ্বের নজর কাড়ে। ভিডিওটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আর্জেন্টিনার বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ঘটনাটি ফলাও করে প্রচার করা হয়। পরে আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে টুইট করে বলা হয়, ‘আমাদের দলকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ! ওরা (বাংলাদেশিরা) আমাদের মতোই পাগল!’

এর পরিপ্রেক্ষিতে আর্জেন্টিনার সাধারণ নাগরিকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি বাংলাদেশিদের অকুণ্ঠ ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্য একটি আর্জেন্টাইন ফ্যান গ্রুপও তৈরি করা হয়।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.