ব্যাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। বিনিয়োগ, রেমিট্যান্সপ্রবাহ এবং আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ব্যাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। অযথা গুজবে কান দেবেন না। উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে বিপদ ডেকে আনবেন না। এছাড়া বিনিয়োগ, রেমিট্যান্সপ্রবাহ এবং আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে আমাদের। বাংলাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ আছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই নানা মনগড়া মন্তব্য করছেন। তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই চলে। বর্তমানে আমাদের পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা মজুত আছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় সব ধরনের ভারী যন্ত্রপাতি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি অনেকটা বন্ধ ছিল। সে সময় আমাদের রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস অবস্থায় না রেখে সেখান থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমরা একটা বিশেষ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলের অর্থ দিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ২ শতাংশ হার সুদে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ঘরের টাকা সুদসহ ঘরেই ফেরত আসছে। এ অর্থ যদি বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হতো তাহলে ৪/৫ শতাংশ হারে সুদসহ ফেরত দিতে হতো। আর তা পরিশোধ করতে হতো রিজার্ভ থেকেই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা বেশি দামে জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, ডাল, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য কিনে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছি। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। মানুষের ভোগান্তি হোক, কষ্ট হোক- তা আমরা কখনোই চাই না। বৈশ্বিক কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছিল। তা এখন অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতিও হ্রাস পাচ্ছে।
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ যে কোনো জিনিসের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা সমন্বয় করবো। আমাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের মাটি উর্বর। মাটিতে বীজ ফেললেই যেখানে গাছ জন্মে, সেখানে বাইরে থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করতে হবে কেন? আমি আপনাদের আবারও অনুরোধ করছি, এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখবেন না।
অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.