বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমছে

বিভিন্ন সংকটে দেশে উৎপাদন কমেছে। বিনিয়োগের জায়গা সংকুচিত হওয়ার কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রয়োজনেও ভাটা পড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। এ মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিলো ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশ ব্যাংকের করা প্রাক্কলনের চেয়েও কম। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২০২২ এ প্রাক্কলন করেছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। যদিও প্রাক্কলিত হারের চেয়ে তা ছিল অনেক কম।

জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছিলো ১১ শতাংশ। পরের মাসে ফেব্রুয়ারিতে খাতটিতে প্রবৃদ্ধি কমে দাড়ায় ১০ দশমিক ৭২ শতাংশে। এরপরে মার্চে সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে। এরপর ক্রমাগত বাড়তে থাকে ঋণ প্রবৃদ্ধি। জুলাই মাসে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশে। আগস্টে ঋণ প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে দাড়ায় ১৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এই প্রবৃদ্ধি আরও কমে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সংকট সমাধানের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরপরেও রিজার্ভ সংকট কাটছে না। বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ডে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও কমে দাড়াবে ২৫ বিলিয়ন ডলারের আশেপাশে। একই সঙ্গে কমেছে ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ।

২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কিন্তু এক বছর আগেও আমানত প্রবৃদ্ধির হার ছিলো ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরেও ব্যাপক হারে কমছে আমানত প্রবৃদ্ধির হার।

আর্থিক সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এসবের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে। দেশে ডলার সংকটে রিজার্ভের পরিমাণ ধারাবাহিক কমছে। এদিকে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণও বাড়ছে। নানা সংকটে দেশের অর্থনীতিতে শঙ্কা বাড়ছে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.