আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামিকে ছিনিয়ে নিলো জঙ্গিরা

ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দুই সদস্য আবু সিদ্দিক ও মঈনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে জঙ্গিরা।

রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, খবর পেয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

এ সময় হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, দুর্বৃত্তরা প্রথমে এসে পুলিশের চোখে স্প্রে মারে। এ কারণে পুলিশ তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তারা ওই দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু তাদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা কাজ শুরু করেছে। আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ওই দুজন মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলার আসামি ছিল। পরে মোটরসাইকেলে করে তাদের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনা একটি তদন্ত কমিটিও করা হবে। কারোর দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করছি, দ্রুত ছিনিয়ে নেওয়া দুই জঙ্গিকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।

ডিএমপি উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন জানান, দুুপুর ১২টার দিকে এই দুই জঙ্গিকে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে তোলার জন্য আদালত চত্বরে নিয়ে আসে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। এ সময় নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের মুখে বিশেষ ধরনের স্প্রে করে লাপাত্তা হয়ে যায় তারা। ঢাকা শহর থেকে বের হওয়ার প্রতিটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বের হওয়া গাড়িগুলো কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বহিষ্কৃত মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুস সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক।

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওইদিন তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.