সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা

ডলার সংকট কাটানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এতে কাজ হচ্ছে না। ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বাজারে ছাড়তে হচ্ছে। এতে চাপ বাড়ছে রিজার্ভে। এদিকে গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স আসে অক্টোবরে। তবে এ সময় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠায় ঢাকার প্রবাসীরা। অক্টোবরে তারা ৭২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ৪৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার। ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ৭২ কোটি ৮৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। এর মধ্যে ঢাকা জেলার প্রবাসীরা পাঠায় ৫০ কোটি ১৯ লাখ ডলার, টাঙ্গলাইের প্রবাসীরা ২ কোটি ৯৯ লাখ, গাজীপুরের ২ কোটি ২০ লাখ, কিশোরগঞ্জ ২ কোটি, মুন্সিগঞ্জ ২ কোটি ৪০ লাখ, নারায়নগঞ্জ ২ কোটি ৫৬ লাখ, নরসিংদী ২ কোটি ২৩ লাখ, মাদারীপুর ১ কোটি ৮২ লাখ, শরিয়তপুর ১ কোটি ৭৫ লাখ, ফরিদপুর ১ কোটি ৭০ লাখ, মানিকগঞ্জ ১ কোটি ৫৫ লাখ, গোপালগঞ্জ ৬ লাখ এবং রাজবাড়ীর প্রবাসীরা ৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্সের পাঠিয়েছেন।

এ সময় বরিশাল বিভাগের প্রবাসীরা ৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। এছাড়া চট্রগ্রাম বিভাগের প্রবাসীরা ৩৮ কোটি ৪৩ লাখ, খুলনা বিভাগের ৭ কোটি ৮৩ লাখ, ময়মনসিংহ বিভাগের ৩ কোটি, রাজশাহী বিভাগের ৬ কোটি ২৮ লাখ, রংপুর বিভাগের ৩ কোটি এবং সিলেট বিভাগের প্রবাসীরা ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

এদিকে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ৫১৪ কোটি ২৩ লাখ ডলার বিক্রি করেছে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী হিসাবায়ন হলে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৬ বিলিয়ন ডলারে। যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার।

গত কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। এর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছরের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। তা বেড়ে গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার হয়। এরপর ধারাবাহিক পতনে রিজার্ভ কমে বর্তমানে দাড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারে।

ডলার সংকটের মধ্যেই ব্যাপকহারে কমছে রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ২০০ কোটির উপরে রেমিট্যান্স এসেছে। তবে পরবর্তীতে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স আসে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অক্টোবরে এর পরিমাণ আরও কমে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

অপরদিকে ডলার সংকটে ভুগছে ব্যাংকগুলো। এতে নতুন করে এলসি খোলা বন্ধ করে দিয়েছে এসব ব্যাংক। তবে বাকি বা দেরিতে পরিশোধের শর্তে আগের খোলা এলসির দায় এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমেনি। রফতানির তুলনায় আমদানি বেড়ে যাওয়ায় ডলার সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করছে।

 

অর্থসূচক/এমএইচ/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.