আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ ডেপুটি গর্ভনরসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জেনে বিষয়টি আদালতকে জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৭ অক্টোবর দিন রেখেছেন আদালত।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় ‘৩৭শ কোটি টাকা লুটপাটে দায়ী পাঁচ ডেপুটি গভর্নর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডে (আইএলএফএসএল) আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পাঁচ ডেপুটি গভর্নরসহ ২৪৯ কর্মকর্তার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিনটি বিভাগের এই কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুট করেছেন আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং মেজর (অব.) মান্নান।
নজিরবিহীন এই অনিয়মের কারণ ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির আলাদা তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে খবরে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘মোট ১২শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দুটি এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিআইএফসি ও আইএলএফএসএল থেকে অবৈধভাবে জামানতবিহীন ঋণ নিয়ে মোট ৩ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে আইএলএফএসএল শুধু ভারতে কারাবন্দি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) এবং তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামেই নেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। আর বিআইএফসি থেকে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান ও তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে গেছে ৬০০ কোটি টাকা। বছরের পর বছর ধরে এই লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও নিশ্চুপ ছিলেন প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।’ পাশাপাশি যেসব ব্যাংক কোনো জামানত ছাড়াই এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে বছরের পর বছর ফেলে রেখেছে তাদেরও প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া যথাযথ তদারকি না করায় রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং অডিট ফার্মগুলোকেও দায়ী করা হয়েছে।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.