খোলা বাজারে ডলারের দামে স্বস্তি

যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের প্রতিটি দেশের মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ানো হচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদ হার। ফলে বিশ্বের প্রতিটি দেশে ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার মূল্য কমছে। বাংলাদেশেও ডলারের দামে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

খোলা বাজারে ডলার প্রতি সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো। বর্তমানে ডলারের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আজ (১৬ অক্টোবর) খোলা বাজারে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৭০ পয়সায় ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিলো ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। মতিঝিল ও পল্টনের মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

ফয়সাল তারেক নামের একজন ডলার বিক্রেতা অর্থসূচককে বলেন, আজকে ডলারের দাম কমেছে। গ্রাহক চাহিদা অনেক কম। আগের দিনের তুলনায় আজকে ডলার প্রতি দর কমেছে আড়াই টাকার মতো। খোলা বাজারে দাম বেশ ওঠা-নামার মধ্যে থাকে। আবার ডলারের দাম বাড়তেও পারে। বাজারে যখন ডলারের দাম বেশি বাড়ছিলো তখন ডলারে যোগান কম ছিলো। অপরদিকে একইসময়ে ক্রেতা চাহিদা অতিমাত্রায় ছিলো।

রোববার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর এসব বাজারের মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার ক্রয় করছে। অপরদিকে ডলার প্রতি ১০৮ টাকা ৭০-৮০ পয়সায় বিক্রি করছে।

একজন গ্রাহক বলেন, কয়েক মাস আগে থেকে অনেক বেশি টাকায় ডলার কিনতে হচ্ছে। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। তবে আজকে এসে দেখলাম খোলাবাজারে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে।

এর আগের দিন শনিবার খোলা বাজারে ১১১ টাকা ৫০ পয়সায় প্রতি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও ১ ডলার কিনতে গ্রাহককে খরচ করতে হয়েছে ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। অপরদিকে এদিন খুচরা বাজারে ডলার ক্রয় করা হচ্ছিলো ১১১ টাকায়। খুচরা বাজারের এক্সচেঞ্জগুলো ডলার প্রতি ৫০ থেকে ৬০ পয়সায় লাভ করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে ডলারের অস্থিরতা তৈরি হয়। বিভিন্ন সিন্ডিকেট দল ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। এতে বিপাকে পড়েন বিদেশগামীরা। বিভিন্ন কৌশলে অবৈধ ব্যবসায়ীরা ডলার ব্যবসা দখলে নেন। এতে আমদানিকারকদের গুণতে হয় বাড়তি খরচ।

গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড বিক্রয়মূল্য ছিল ১২০ টাকা পর্যন্ত। এসময় ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ পরিদর্শন শুরু করে। তখন অবৈধভাবে ডলার ব্যবসার অভিযোগে ৪৫টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর সনদ না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৫টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব উদ্যোগে ডলারের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করে। অপরদিকে অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বুধবার (১২ অক্টোবর) পর্যন্ত সব মিলিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ৪০৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গত অর্থবছর বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রচুর ডলার বিক্রির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.