‘মিউচুয়াল ফান্ডের আকার এক লাখ কোটি টাকা করা সম্ভব’

দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের আকার দ্রুত বাড়ছে। দুই বছর আগে এই খাতের মোট সম্পদের মূল্য ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। এই খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করা গেলে কয়েক বছরের মধ্যে মিউচুয়াল  ফান্ড খাতের মোট আকার এক লাখ কোটি টাকায় উন্নীত করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. মিজানুর রহমান এই কথা বলেছেন।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডস আজ (৬ অক্টোবর) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন  ভবনের সম্মেলন কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি  ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী  মোস্তফা জব্বার। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও ড. রোমানা ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগেও মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশকিছু বিশৃঙ্খলা ছিল। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার সময় (২০২০) অ্যাকাউন্টিংয়ের হিসাবে দেশের মিউচুয়াল ফান্ডের মোট আকার ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবে এর সম্পদ মূল্য ছিল ৭ হাজার কোটি টাকা। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো বেপরোয়াভাবে ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করেছিল। নিবিড় মনিটরিংয়ের ফলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে।

তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের আর্থিক বিবরণী তৈরি ও উপস্থাপনে আইএফআরএস অনুসরণের তাগিদ দেন।

ড. মিজান বলেন, তাদের তাগিদে বেশ কিছু সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এখন সম্পদ মূল্যের সমান দামে ইউনিট সমর্পণের সুযোগ দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। আয় ব্যবস্থাপনা, ভ্যালুয়েশন ও লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে।

তিনি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলোর প্রতি লভ্যাংশ ঘোষণা ও ফান্ডের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডে ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মিত লভ্যাংশ দেওয়া। যেখানে এফডিআরের সুদের হার ৬ শতাংশ, দীর্ঘ মেয়াদের সরকারি বন্ডের সুদের হার ৮ শতাংশ, সেখানে মিউচুয়াল ফান্ডে ১২/১৩ শতাংশ লভ্যাংশ দিলেই বিনিয়োগকারীরা খুশি হবে, যদি এই লভ্যাংশের ধারাবাহিকতা থাকে।

তিনি আরও বলেন, যদি লভ্যাংশের ধারাবাহিকতা থাকে, যদি বিনিয়োগকারীরা বিশ্বাস করেন, তাদের টাকা নিরাপদ, তাহলে তারা ইউনিট কেনার জন্য আপনাদের (সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি) দরজার সামনে এসে ভিড় জমাবেন।

ড. মিজান বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফান্ডের অ্যাকাউন্টিং, রিপোর্টিং ও ভ্যালুয়েশন যাতে এআইএফআরএস (International Financial Reporting Standard-IFRS) অনুসারে হয়, সে বিষয় নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের চেষ্টা থাকবে ফান্ড ম্যানেজারদের দক্ষতা বাড়ানো ও পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনার।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.