ইরানে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ‘বিশৃঙ্খলাকারীদের’ বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে বলেন, ‘বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড’ গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক ফাঁকে সংবাদ সম্মেলনে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুর মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট রাইসি আরও বলেছেন, ‘ইরানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, তবে বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয়’।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ।
নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের একটি দল গত সপ্তাহে মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির।
মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয় তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে। প্রথমে ইরানের কুর্দি-জনবহুল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শুরু হয় বিক্ষোভ। দেশটির অন্তত ৫০টি শহরে এখনো বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে কেউ কেউ তাদের ঘোমটা ফেলে দিয়েছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে হিজাব। কেউ কেউ প্রকাশ্যে তাদের চুল কেটে ফেলেছে।
ইরানের শক্তিশালী রেভল্যুশনারি গার্ড দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়ায় ‘যারা মিথ্যা সংবাদ ও গুজব ছড়ায়’ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে আমিনির পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
২০১৯ সালে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল ইরানে। এরপর এবারই এতো বড় বিক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সরকার।
সূত্র: রয়টার্স
অর্থসূচক/এমএস
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.