লুহানস্ক পুনর্দখলের পথে ইউক্রেন, গণভোটের ঘোষণা রাশিয়ার

চলতি সপ্তাহেই লুহানস্কে গণভোটের ঘোষণা দিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তার আগেই লুহানস্ক পুনর্দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

লুহানস্কের ইউক্রেনীয় গভর্নর গাইদাই জানিয়েছেন, লুহানস্কের বিলোহোরিভকা গ্রামটি ইউক্রেনের সেনা দখল করে নিয়েছে। এখান থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে লিসিচ্যানস্ক শহর। গত গরমে এটিই হলো লুহানস্ক অঞ্চলে শেষ ইউক্রেনীয় শহর যা রাশিয়া দখল করেছিল। বস্তুত, এই শহরটি দখল করার পর রাশিয়া সেখান থেকেই গোটা লুহানস্কের উপর নজরদারি চালিয়েছে।

গাইদাইয়ের দাবি, ইউক্রেনের সেনা এবার ওই শহরটির দিকে এগোচ্ছে। যদিও রাশিয়া প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। লিসিচ্যানস্ক পুনর্দখল হলে লুহানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া অনেকটাই জমি হারাবে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। টেলিভিশনে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, লুহানস্ক থেকে রাশিয়ার সেনা ক্রমশ পিছু হঠছে। যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন ওই অঞ্চল পুনর্দখল করবে।

এদিকে রাশিয়ার একটি সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই লুহানস্কে গণভোটের ব্যবস্থা করা হতে পারে। ২৩ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে লুহানস্কের বিভিন্ন অঞ্চলে গণভোট করা হবে বলে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জানিয়েছে। বস্তুত, যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে লুহানস্ক এবং দনেৎস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পৃথক রাষ্ট্রের ঘোষণা দিয়েছিল। এবার তারা রাশিয়ার সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবং সে কারণেই গণভোটের আয়োজন। লুহানস্কের এই ঘোষণার পরে দনেৎস্কও একই দাবি করেছে। তারাও গণভোটের আয়োজন শুরু করেছে ওই একই সময়ে।

এদিকে লুহানস্ক এবং দনেৎস্কে গণভোট হলেও তা গ্রাহ্য হবে না বলে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় কার্যত সমস্ত বিশ্বনেতাই জানিয়ে দিয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস বলেছেন, ‘স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, এই ধরনের গণভোটকে জার্মানি কখনোই স্বীকৃতি দেবে না।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ আমেরিকা কোনভাবেই সমর্থন করে না। ভোট যদি হয়, আমেরিকা তা বৈধ বলে মনে করবে না।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ একই অভিমত জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, রাশিয়া দখলকে বৈধ করতে চাইছে। ফ্রান্স কখনোই এ ধরনের কাজকে স্বীকৃতি দেবে না।

তবে রাশিয়ার বক্তব্য, মানুষের সিদ্ধান্তকেই তারা চূড়ান্ত বলে মনে করে। ফলে ওই অঞ্চলের মানুষ কী মনে করছেন, তা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার আদৌ ভোটের আয়োজন করা সম্ভব হয় কি না! সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.