‘পুঁজিবাজার ছাড়া এসডিজি গোল অর্জন সম্ভব নয়’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. এজাজুল ইসলাম বলেছেন, শুধু ব্যাংক-নির্ভর অর্থায়নের মাধ্যমে সহস্রাব্দর লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করা সম্ভব নয়। এটি অর্জন করতে হলে দেশের পুঁজিবাজারকেও কাজে লাগাতে হবে। এর জন্য দরকার বিকশিত ও স্থিতিশীল একটি পুঁজিবাজার।

তিনি বলেন, ২০৩০ সালে আমাদের লক্ষ্য এসডিজি গোল অর্জন করা। আর ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচয় লাভ করবো। এসডিজি গোল অর্জন ও নিজেদেরকে উন্নত দেশে উন্নীত করতে হলে বিপুল বিনিয়োগ দরকার। ব্যাংকের একার পক্ষে বিনিয়োগের এই বিশাল চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই বিকল্প পথ হচ্ছে পুঁজিবাজার।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় সিএমজেএফ ও বিএমবিএ যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ সব কথা বলেন।

আমাদের বর্তমানে যে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে সবগুলো ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আমরাও সবসময় এই বার্তাটি দেয়ার চেষ্ঠা করি যে, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য আমরা কেন পুঁজিবাজারের উপর নির্ভরশীল হচ্ছি না। মানি মার্কেট এবং ক্যাপিটাল মার্কেটের একটা কো-অর্ডিনেশন থাকা প্রয়োজন। ব্যাংকের সুদের হারের তারতম্যের কারণে ব্যাংকে দির্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে অভ্যস্ত হয়ে পরেছে সবাই। আমরা যদি ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করি তাহলে ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ কমিয়ে আনতে হবে।

ড. এজাজ বলেন, যখনি আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মনিটরিং পলিসি স্টেটমেন্ট নিয়ে আলোচনা করি তখনই আমাদের সব থেকে গুরুত্বের জায়গাটি হয় পুঁজিবাজার। আমরা সব সময় চিন্তা করি যে আমাদের কোনো উদ্যোগের কারণে পুঁজিবাজারের কোনো প্রভাব পরছে কি না। বাংলাদেশ ব্যাংক চায় পুঁজিবাজারকে সর্বদা স্থিতিশীল রাখতে।

তিনি আরও বলেন, পেছনের দিকে যদি আমরা দেখি তাহলে ১৯৯৬ সাল এবং ২০১০ সালের দুইটি নেতিবাচক অবস্থা আমাদের রয়েছে। সেখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি, অনেক রকমের উদ্যোগ গ্রহণে সক্ষম হয়েছি। আসলে একটা ক্ষতি না হলে আমরা বুঝতে পারি না। ১৯৯৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাজারের জন্য প্রচুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি না মার্কেট আগের মত বড় পতনের শিকার হচ্ছে না।

ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান সিএফএ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো: জাহিদ হাসান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আল-আমিন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও, সিএফএ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট শাহীন ইকবাল, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশীদ এফসিএমএ,  ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর কাউন্সিল সদস্য গোপাল চন্দ্র ঘোষ।

অর্থসূচক/এমআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.