রাশিয়ার দখলে থাকা খেরসনের গণভোট পেছাল

খেরসন, দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে সেপ্টেম্বরে গণভোটের পরিকল্পনা করেছিল রাশিয়া। গণভোটের মাধ্যমে ওই অঞ্চলগুলিকে নিজেদের দেশে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু খেরসনে মস্কোর প্রশাসন জানিয়েছে, এখনই গণভোট হবে না। নিরাপত্তার কারণেই গণভোট পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছ এ বলে রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, নিপ্রো নদীর উপর অ্যান্তোনিভস্কাই সেতুটি ইউক্রেন বোমা মেরে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। ওই সেতু পার করেই খেরসনে ঢুকতে হয়। পরিকাঠামোগত বেশ কিছু সমস্যা থাকায় ভোটের আয়োজন করা মুশকিল হচ্ছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

ঝাপোরিজ্ঝিয়া, দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কেও এ মাসে গণভোট হওয়ার কথা ছিল। সেই ভোটগুলো নিয়ে অবশ্য এখনো স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। ইউক্রেনসহ গোটা পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার এই গণভোটের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনভাবেই ইউক্রেন এই গণভোট মানবে না। নিজেদের জমি তারা রাশিয়ার হাতে তুলে দেবে না। শুধু তা-ই নয়, ২০১৪ সালে রাশিয়া একই প্রক্রিয়ায় ক্রাইমিয়া দখল করে নিয়েছিল। ইউক্রেন তা-ও মেনে নেয়নি।

জেলেনস্কি সোমবার দাবি করেছেন, দক্ষিণ ইউক্রেনের বেশ কিছু জমি রাশিয়া দখল করে নিয়েছিল। ইউক্রেন তা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। তবে রাশিয়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সোমবার রাতের দৈনিক বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি আশা করছেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন। সোমবারই যুক্তরাজ্য নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছে। বরিস জনসনের জায়গায় বসবেন লিজ ট্রাস। বরিস জনসন ইউক্রেনকে বিপুল সাহায্য করেছেন। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি প্রত্যাশা করেন যে ট্রাসও একইভাবে তাকে সাহায্য করবেন। বস্তুত, বরিস জনসন বিদায়কালেও ইউক্রেনের জন্য একাধিক সামরিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ট্রাসও একইভাবে ইউক্রেনের পাশে থাকবেন বলে মনে করছেন জেলেনস্কি।

সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ডকট্রিনে সই করেছেন। যেখানে রাশিয়ান ওয়ার্ল্ড নামক একটি ধারনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতি আরো আগ্রাসী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০০৮ সালে জর্জিয়ার কিছু এলাকা দখল করেছিল রাশিয়া। মস্কো ওই এলাকাগুলিকে স্বাধীন হিসেবে মর্যাদা দেয়। একইসঙ্গে পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলকেও মস্কো একইরকম স্বীকৃতি দেয়। এই সমস্ত অঞ্চল রাশিয়ার বলে মনে করে মস্কো। ৩১ পাতার রাশিয়ান ওয়ার্ল্ড ডকট্রিন তারই স্বীকৃতি। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.