বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ফোরে আফগানরা

নাজিবউল্লাহ জাদরানের ঝড় ও ইবরাহীম জাদরানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ হাসি হাসা হল না সাকিব আল হাসানের দলের। ৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিতের সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে সুপার ফোরেও জায়গা করে নেয় মোহাম্মাদ নবিরা।

১২৮ রানের মামুলি লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানিস্তানকে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে ফেলে বাংলাদেশ। চাপমুক্ত হতে গিয়ে বড় শট খেলার প্রয়াসে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারাতে পারতো দলটি। কিন্তু সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিবের খাটো লেংথের বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তবে সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাতে ব্যক্তিগত ৬ রানে জীবন পান গুরবাজ। যদিও আফগান ওপেনারকে ইনিংস বড় করতে দেননি সাকিবই। পঞ্চম ওভারে আবারও সাকিবের বলে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টা করেন গুরবাজ। তবে সাকিবের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের কারণে বলের লাইন মিস করেন তিনি। তাতে অনায়াসে স্টাম্পিং করে মুশফিকুর রহিম। আর গুরবাজ ফেরেন ১১ রান করে।

পাওয়ার প্লের পর নিজেদের খানিকটা গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে ইবরাহিম জাদরানের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার আগেই হজরতউল্লাহ জাজাইকে ফেরান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের স্টাম্প সোজা বলে ক্রস ব্যাটে খেলে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন বিপজ্জনক জাজাই। বাঁহাতি এই ওপেনার রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাতে ২৩ রানে ফিরে যেতে হয় তাকে। এরপর মোহাম্মদ নবিকে ব্যক্তিগত ৮ রানে এলবিডব্লিউ করে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আর তাতেই স্বস্তি ফিরে বাংলাদেশ শিবিরে। ৩ উইকেট হারালেও একপ্রান্তে অটল হয়ে লড়তে থাকেন ইব্রাহীম। তাকে সঙ্গ দেন নাজিবউল্লাহ।

দেখে শুনে খেলে এই দুজন সমীকরণ নিয়ে যান ২৪ বলে ৫৭ রানের। এরপর অবশ্য বাংলাদেশের বোলারদের ওপর শুধু তান্ডবই চালিয়েছেন নাজিব। তার ব্যাটেই ৯ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌছায় আফগানিস্তান। সঙ্গে নিশ্চিত করে সুপার ফোর।

এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। যদিও টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় আগে ব্যাটিংয়ের ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিল। সংগ্রহটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। তার অপরাজিত ৪৮ রানে নির্ধারিত ২০ ওভারে টাইগারদের সংগ্রহ ১২৭ রান।

ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো করতে পারেননি ওপেনাররা। দ্বিতীয় ওভারেইও আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের স্পিন ভেলকিতে মাত্র ৭ রান করে বোল্ড হয়ে আউট হন তিনি। যে বলে নাইম আউট হয়েছেন তার ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে ফাঁকা জায়গা ছিল স্পষ্ট। নাইম দ্রুত ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। মুজিবের বলে লেগবিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেছেন এই ওপেনার। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ বলে ৫ রান। এরপর অধিনায়ক সাকিব দুটি দৃষ্টিনন্দন চার মারলেও থিতু হতে পারেননি তিনিও।

রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে এসে পা বরাবর বল করে সাকিবের স্টাম্প ভেঙেছেন এই আফগান স্পিনার। এর ফলে দলীয় ২৪ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আর সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৯ বলে ১১ রানের ইনিংস।ব্যক্তিগত ১ রানে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম শিকার হয়েছেন রশিদ খানের। মাত্র ২৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে বাংলাদেশের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। এই দুজনে যোগ করেন ২৫ রান। দারুণ শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি আফিফ। তিনি মাত্র ১২ রান করে রশিদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন।

ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মাহমুদউল্লাহ ২৫ রান করে আউট হয়েছেন রশিদের ওপর চড়াও হতে গিয়ে। এরপর সপ্তম উইকেটে শেখ মেহেদীকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন মোসাদ্দেক। এই দুজনের জুটি থেকে আসে ৩৮ রান। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রান আউট হয়ে ফেরেন ১৪ রান করা মেহেদী।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.