সম্রাটের জামিন কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ রুল শুনানির জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।

জামিন বাতিলে দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।

এর আগে গত ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে সম্রাটকে জামিন দেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারাগারে না থেকে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন সম্রাট। জামিন পাওয়ার পরও তিন দিন তিনি হাসপাতালেই অবস্থান করছিলেন।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।

এ ছাড়া তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ আছে।

মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর গত ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক করে মামলাটি এ আদালতে বদলির আদেশ দেন।

অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মগোপনে চলে যান সম্রাট। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানী ঢাকায় যে অভিযান পরিচালনা করে, তা আওয়ামী লীগে ‘শুদ্ধি অভিযান’ হিসেবে পরিচিতি পায়। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে আটক করা হয় সম্রাটকে। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং, অস্ত্র আইন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং ও অস্ত্র আইনের মামলায় আগেই জামিন হয় তার। সর্বশেষ গত সোমবার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিন হলে রাতেই মুক্তি পান তিনি। গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত সম্রাট ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.