চট্টগ্রামের নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে বোমা হামলার অপরাধে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ৪ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান ও রমজান আলী, বাবুল রহমান ওরফে রনি এবং আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফার। আসামিদের মধ্যে সাখাওয়াত পলাতক।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনোরঞ্জন দাশ বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)/১২ ধারায় জেএমবি সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ৫ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ঘটনার এক বছর পর এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় ১৬৪ ধারায় কোনো আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়নি। একইসঙ্গে ১৬৪ ধারায় কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি। এই মামলায় কোনো জব্দ তালিকা ছিল না। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পরে ১০ মিনিটের ব্যবধানে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরের দুটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মসজিদগুলোতে শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারাও নামাজ পড়তে আসতেন। বিস্ফোরণে সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে মোট ২৪ জন আহত হন। বোমা হামলার ৯ মাস পর ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে নগরীর ইপিজেড থানায় সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলায় নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান ও রমজান আলী ও বাবুল রহমান ওরফে রনিকে আসামি করা হয়।
পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে গ্রেপ্তার আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারের সম্পৃক্ততায় পায় পুলিশ। জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম খান নোমান ওরফে নাফিস ওরফে ফারদিনের নেতৃত্বে নৌ ঘাঁটির মসজিদে বোমা হামলা চালানো হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ফারদিন ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল বগুড়ার শেরপুরে গ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশ জানায়। এ কারণে তার নাম এই মামলার আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর ৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেয় ইপিজেড থানার পরিদর্শক মুহাম্মদ ওসমান গণি। অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। চলতি বছরের ২৩ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল। এতে মোট ১৭ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.