জ্বালানির আগুনে পুড়ছে বাজার

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথেই যেন হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম। দাম বেড়েছে শাক-সবজী, মসলা জাতীয় পণ্য থেকে শুরু করে সব ধরণের পণ্যে।

রবিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে জ্বালানি তেলের দরবৃদ্ধি এবং এর ফলে বাজারে পন্যের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে ক্রেতা, বিক্রেতা এবং আড়তদারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।

গেলো শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই ঘোষণা আসে সব ধরণের জ্বালানি তেলের বড় মূল্যবৃদ্ধির। এসময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার ডিজেল ও কেরোসিন কিনতে হবে ১১৪ টাকায়।

এছাড়াও অকটেনের দাম লিটারে বাড়ানো হয় ৪৬ টাকা। এখন প্রতি লিটার অকটেন কিনতে ১৩৫ টাকা ‍গুনতে হবে। এর বাইরে লিটারপ্রতি ৪৪ টাকা বাড়ানো হয় পেট্রলের দাম। এখন থেকে জ্বালানিটির প্রতি লিটার ১৩০ টাকা।

এদিকে তেলের এই মূল্যবৃদ্ধি যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে । আরতগুলোতে বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ সকল পণ্যের দাম। যার প্রভাব পরতে শুরু করেছে খুচরা বাজারে। আড়তগুলোতে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২ টাকা। রসুন এবং আদার দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে প্রায় ৩ থেকে ৫ টাকা। আলুর দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা প্রতি কেজিতে।

মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন নামের এক আড়তদার বলেন, এমনভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গাড়ি ভাড়া প্রায় দ্বিগুন বেড়ে গেছে। আগে যেখানে ১৫ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া লাগতো সেখানে এখন ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া লাগছে।

খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা আবার কোথাও কোথাও এই দাম ৫০ টাকাও ছাড়িয়েছে। কেজিপ্রতি আদা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায় এবং রসুন ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা।

অন্যদিকে একই অজুহাতে বেড়ছে কাচামরিচ এবং সবজীর দাম। কাচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, কাকরোল ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা ও শসা ১২০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে চাল, ডাল, আটা জাতীয় পণ্যের বাজার এখনো স্বাভাবিক থাকলেও ব্যবসায়ীরা  দিচ্ছেন নেতিবাচক পূর্বাভাস।

সবুজ মিয়া নামের একজন দোকান মালিক বলেন, গাড়ি ভাড়া বেড়েছে গতকাল থেকে, আমাদের কাছে আগের মাল মজুদ থাকায় এখনো নতুন করে কিছু আনা লাগেনি। তবে মজুদ শেষ হয়ে গেলেই বাড়তে পারে সবকিছুর দাম।

এমন পরিস্থিতে বাজার করতে এসে খালিদ শাকির নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমারা পড়ালেখা করার জন্য ঢাকা শহরে থাকি, কিন্তু এখানে লিভিং কস্ট দিন দিন বেড়েই চলেছে। আগে যেখানে ২ হাজার টাকার বাজার করতে হতো সেখানে এখন ৫ হাজারেও হয়না।

কিছুটা দর বেড়েছে মাছ-মাংসের বাজারেও। বাড়তে পারে সাবান, গুড়া-মসলা, তেল সহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

এমন পরিস্থিতিতে সীমিত আয়ের মানুষের মাঝে ফুটে ওঠেছে ভোগান্তির চিত্র। একদিকে সরকার বলছে মিতব্যায়ী হতে, অন্যদিকে এক বেলার খাবার জুটানোও কঠিন হয়ে পড়েছে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলোর।

অর্থসূচক/এমআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.