বিশ্ববাজারে তেলের দাম সর্বনিম্ন হলেও দেশে ৫১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি

বর্তমানে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাজার চাহিদা নিয়ে তেল ব্যবসায়ীরা শঙ্কায় থাকলেও তেলের যোগান স্থিতিশীল হওয়ায় দাম বাড়েনি। উল্টো আমেরিকার চাকরির বাজারে নতুন করে ৫ লাখ ২৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সুযোগ হওয়ায় তেলের দাম কমেছে। যদিও বাংলাদেশের বাজারে শনিবার (৬ আগস্ট) থেকে কার্যকর হওয়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫১.৭ শতাংশ।
খবরে ব্লুমবার্গ ও বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ব্লুমবার্গ জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে আজ এক ব্যারেল (প্রায় ১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল ৯৪.৯২ ডলারে (ডলার প্রতি ৯৫ টাকা ১৬ পয়সা হিসেব করে ৯ হাজার ৩২ টাকা ৫৮ পয়সায়) বিক্রি হয়েছে। এ হিসেবে ১ লিটার ক্রুড অয়েলের দাম পড়েছে ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা। আর যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআইয়ের) দাম ব্যারেল প্রতি ৮৯ ডলারে নেমে এসেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দু’মাস আগেও যেখানে তেলের দাম ১২০ ডলার ছাড়িয়েছিল, এখন এতটা বেশি মাত্রায় কমার পেছনে হয়তো বিনিয়োগকারীদের বিশ্বমন্দার আশঙ্কা কাজ করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির মজুত ভাণ্ডার প্রত্যাশার তুলনায় বেশি হওয়াই এই দরপতন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এদিকে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। রয়টার্স বলছে, বাংলাদেশে শনিবার (৬ আগস্ট) থেকে কার্যকর হওয়া জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৫১.৭ শতাংশ। জ্বালানি খাতে ভর্তুকির চাপ কমাতে সরকার এটা করেছে।

সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই ২০২২) তেল বিক্রিতে ৮৫ মিলিয়ন ডলারের (৮শ কোটি টাকা) লোকসান গুণেছে। বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতিতে মূল্য বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।

জ্বালানির নতুন মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, জানি জ্বালানির বর্ধিত এই দাম সবার কাছে অসহনীয়। কিন্তু এটা করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা ছিল না। জনগণকে (জ্বালানি ভোক্তা) এর জন্য সহিষ্ণু হতে হবে। বিশ্ববাজারে দাম কমলে মূল্য সমন্বয় করা হবে।

সরকারি এক সূত্র জানায়, তেলের দাম বাড়ানোটা দরকার ছিল তবে ভাবতেও পারিনি যে একসঙ্গে অতটা বাড়বে। জানি না সরকার কি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য এমনটা করছে কিনা। আর এটা এমন সময় করা হলো যখন দেশে সবকিছুর দাম লাগামহীন।

বর্তমানে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ পার হয়ে গেছে। এটা হয়েছে মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে। তবে বছর ঘুরে মূল্যস্ফীতি ৭.৪৮ শতাংশে রেকর্ড করবে। এতে গরীব, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাবে।

অর্থসূচক/ এইচডি

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.