চাল উৎপাদন সংকটে ভারত, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশেও

বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ ভারতে চাল উৎপাদনে সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে উচ্চ-মূল্যস্ফীতির মধ্যে রফতানি কমলে বিশ্বজুড়ে এক নতুন খাদ্য সংকট তৈরি হবে। এ সংকটের প্রভাব থেকে বাদ যাবে না বাংলাদেশ, নেপাল ও চীন।

বুধবার (৩ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা ও মার্কিন সংবাদ মাধ্যম, ব্লুমবার্গের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলছে, বিশ্বের মোট চাউলের ৪০ শতাংশ যোগান দিয়ে থাকে ভারত। উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের মতো কিছু কিছু জায়গাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এবং ফসলের মাঠ সংকুচিত হয়ে আসায় ভারতে চাউল উৎপাদন কমেছে। প্রায় তিন বছরে শস্যক্ষেত্র হ্রাস পেয়েছে ১৩ শতাংশ।

এদিকে চাউল উৎপাদন কমায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। আশঙ্কা করছেন সরকার রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। এটা আসন্ন পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে যেহেতু বিশ্বের কোটি কোটি লোকের প্রধান খাদ্য ভাত। এর আগেও দেখা গেছে ভারত সরকার দেশকে অগ্রাধিকার দিতে চিনি ও গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

রফতানিকারক এক প্রতিষ্ঠান স্পঞ্জ এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মুখেশ জেইন জানান, চাউলের জন্য বাংলাদেশের চাহিদা বৃদ্ধি ও দেশের কয়েকটি প্রদেশে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উৎপাদন কমেছে। এই সংকটে এক সপ্তাহ আগে অন্যান্য জিনিসপত্রের মূল্য ১০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চাউল প্রতি টনে এখন ৩৬৫ ডলারে রফতানি হলেও সেপ্টেম্বরে সেটা বেড়ে ৪শ ডলারে পৌঁছাতে পারে।

 অপরদিকে দেশটির উত্তর প্রদেশের রাজেশ কুমার সিংহ নামে এক কৃষক বলেন, প্রতিবছর ৭ একর (২.৮ হেক্টর) জমিতে ধান উৎপাদন করি। কিন্তু চলতি বছর জুন ও জুলাইয়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়াতে আমি সাড়ে তিন একর জমিতে ধানের বীজ বপন করেছি। এটা সত্যিই বিপজ্জনক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সূত্রের উল্লেখ করে ব্লুমবার্গ ২০২১-২২ বছরের এক তথ্যচিত্র (পাইচার্ট) প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যায়, শীর্ষ চাউল রফতানিরক দেশের তালিকায় থাকা ভারত ২২ মিলিয়ন টন চাউল যোগান দিয়ে থাকলেও থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম যোগান দিয়ে থাকে ৭ মিলিয়ন টন করে। আর পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যোগান দিয়ে থাকে যথাক্রমে ৫ মিলিয়ন ও ৩ মিলিয়ন টন করে।

এই পরিস্থিতে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সেক্রেটারি সিরাজ হুসেইন জানান, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাউল উৎপাদন কমেছে। সরকারের ইথানল উৎপাদনের জন্য চাল বরাদ্দের নীতি পর্যালোচনা করা উচিত। জ্বালানি মূল্য কমাতে সরকার ইথানলের ব্যবহার বাড়াতে পারে।

উল্লেখ্য, ভারতে উৎপাদিত চাউলের চাহিদা রয়েছে চীন, বাংলাদেশ, নেপাল ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশসহ শতাধিক দেশে। এসব দেশ ভারতের বৃহত্তম চাউলের খরিদ্দার।

 

অর্থসূচক/এইচডি/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.