শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় সরকার হচ্ছে, ২০ জুলাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় সরকার গঠিত হচ্ছে। পরবর্তী পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই সর্বদলীয় সরকার দেশ পরিচালনা করবে।

আগমী মার্চ মাসের মধ্যে দেশটিতে নতুন পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে তার আগেই আগামী ২০ জুলাই পার্লামেন্টে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নতুন একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে।

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে  সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের ঢুকে পড়ার দুদিন পর এ ঘোষণা এলো।

খবর রয়টার্সের।

স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে এক বিবৃতিতে বলেছেন, শুক্রবার (১৫ জুলাই) পার্লামেন্ট ফের অধিবেশনে বসার পাঁচ দিন পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ (সোমবার) রাজনৈতিক দলের নেতারা বৈঠকে একমত হয়েছেন যে, সংবিধান অনুযায়ী নতুন একটি সর্বদলীয় সরকার গঠন করা জরুরি।
স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে আরও বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দল জানিয়েছে, সর্বদলীয় সরকার গঠনে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও পদত্যাগে প্রস্তুত।’

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগের পরিকল্পনার কথা প্রধানমন্ত্রীকে নিশ্চিত করেছেন। সর্বদলীয় সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চুক্তি হলে মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও পদত্যাগ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

গত শনিবার শত শত বিক্ষোভকারী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিতে ঢুকে পড়ে। সেদিন রাতেই স্পিকার মাহিন্দা জানান, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া আগামী বুধবার (১৩ জুলাই) পদত্যাগ করবেন বলে তাঁকে জানিয়েছেন।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের ঘোষণা নিশ্চিত করে জানায়, প্রেসিডেন্ট আগামী বুধবার পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র হস্তান্তর করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে জানিয়েছেন।

উল্লেখ, চরম জ্বালানি ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ে ধুঁকছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় জ্বালানী তেলসহ অতি জরুরি কোনো পণ্যও আমদানি করতে পারছে না দেশটা। মূল্যস্ফীতি বেড়ে তুঙ্গে উঠেছে। জীবনযাপনে অসহনীয় অবস্থা। এই পরিস্থিতির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের পরিবারের সীমাহীন দুর্নীতিকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করে লাখ লাখ মানুষ। দাবি মেনে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে যান মাহিন্দা রাজাপক্ষে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া পদত্যাগ করবেন না বলে এতদিন গোঁ ধরে ছিলেন। কিন্তু শনিবার বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বাধা অমান্য করে রাজধানীতে প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়লে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.