পদত্যাগ করছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া

অবশেষে বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষে। আগামী ১৩ জুলাই তিনি পদত্যাগ করবেন বলে দেশটির সংসদের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াবা আবেবর্ধনে জানিয়েছেন তিনি।

বিবিসি শ্রীলঙ্কাকে মাহিন্দা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দেশব্যাপী সরকার বিরোধী বিক্ষোভ তীব্র হওয়া এবং পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শনিবার বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার পর গোতাবায়া পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

উল্লেখ, তীব্র জ্বালানি সঙ্কট ও অর্থনীতির নাজুক অবস্থার প্রেক্ষিতে গত কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কায় প্রবল সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছে। বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন, রাজাপাক্ষে পরিবারের স্বজনপ্রীতি, পরিবারতন্ত্র  ও সীমাহীন দুর্নীতি এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও রাজনীতি থেকে রাজাপাক্ষে পরিবারের অপসারণ চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে গত মাসে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার ভাই মাহিন্দ্রা রাজাপাক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। এরপর তিনি যাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেই রনিল বিক্রমাসিংহেও শনিবার পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভ কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশংকার মুখে শুক্রবার শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাক্ষেকে তার সরকারি বাসভবন থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এ কারণে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে প্রেসিডেন্ট ভবনে ঢুকে পড়লেও গোতাবায়ার দেখা পায়নি। তাতে সাময়িকভাবে বড় বিপর্যয় এড়ানো গেলেও পদত্যাগ না করা পর্যন্ত যে গোতাবায়ার মুক্তি মিলছে না, তা মোটাদাগে স্পষ্ট হয়ে উঠে। সম্ভবত এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী গোতাবায়াকে আর সমর্থন না যোগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ তাতে সরকার-বিরোধী আন্দোলনের ব্যাপ্তি আরও বাড়তে পারে এবং এটি সেনাবাহিনী-বিরোধী আন্দোলনেও রূপ নিতে পারে। গোতাবায়ার পদত্যাগের মাধ্যমেই কেবল পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো সম্ভব মনে করে তাকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এ বাস্তবতায় পদত্যাগ করা ছাড়া গোতাবায়ার সামনে আর কোনো বিকল্প না থাকায় তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা পার্লামেন্টের স্পিকারকে জানিয়ে দেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.