শেহবাজ শরিফ দায়িত্ব নেওয়ার পর বাণিজ্য ঘাটতিতে সর্বকালের রেকর্ড

পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিদায়ের পর দেশটির বাণিজ্য ঘাটটি সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি ৪৮.৬৬ বিলিয়নে ডলারে দাঁড়িয়েছে যা একই সময়ে আগের বছরে ছিল ৩০.৯৬ বিলিয়ন ডলার। এ তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতিতে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৭ শতাংশ।

শনিবার (২ জুলাই) দেশটির দাফতরিক বিভাগ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। গত মে মাসে ৮শ’র বেশি পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি এমন ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছেছে। খবরে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ডন

চলতি অর্থ বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হয়। সে সময় (এপ্রিলে) বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩.৭৮ বিলিয়ন ডলার। তার ক্ষমতাচ্যুতিতে দেশটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেহবাজ শরিফ। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর মে মাসে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ৪.০৪ বিলিয়ন ডলারে। তারপর জুন মাসে সেটা দাঁড়িয়েছে ৪.৮৪ বিলিয়ন ডলারে যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৩.৬৬ বিলিয়ন ডলার।

ক্ষমতায় থাকা শেহবাজ সরকার বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে ডনের প্রতিবেদনে ওঠে আসে। শেহবাজ ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে রফতানির তুলনায় আমদানি বেড়ে দিগুণ হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তেলের দামও বেড়েছে সর্বোচ্চ। তবে দেশটির রফতানি ২.৫ থেকে ২.৮ বিলিয়ন ডলারে স্থির রয়েছে।

পাকিস্তান ইকোনোমিক সার্ভে ২০২১-২২ অনুযায়ী, সব খাতেই আমদানি রেকর্ড হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির কারণে ভোজ্যতেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আমদানি ব্যয় হয়েছে জ্বালানি খাতে। এছাড়া পাম, সয়াবিন তেল, চা-চিনি, সার ও স্টিল আমদানিও বেড়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে পাকিস্তানের বাৎসরিক বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩৭ বিলিয়ন। সেটা পরবর্তী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কমে ৩১.৮ বিলিয়নে নেমে আসে। এ ধারাবাহিকতায় ৩১.৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি আবারো পরবর্তী ২০১৯-২০ অর্থবছরে কমে ২৩.২ বিলিয়নে নেমে আসে। কিন্তু ২০২০-২১ সালে সেটা না কমে উল্টো বেড়ে গিয়ে ৩০.৮ বিলিয়ন ডলারে চলে যায়। আর এ বছর বাণিজ্য ঘাটতির আরো উন্নতি হয়ে ৪৮.৬৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায় যা পাকিস্তানের ইতিহাসে এ যাবৎ সর্বকালের রেকর্ড।

অর্থসূচক/এইচডি/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.