সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে: এমপি আব্দুস শহীদ

সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন সরকারদলীয় এমপি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, ‘চুরি বলব না, তবে আমাদের প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে’।

বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আয়োজিত এক সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। প্রকল্প বাস্তবায়নে অসংগতির বিষয়ে তিনিও খোলামেলা কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এ সময় প্যানেল আলোচক ছিলেন ডাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’র সভাপতি রিজওয়ান রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। কিন্তু দেখা যায়, পঞ্চগড়ের কোনো প্রকল্পের পরিচালক ঢাকায় থাকছেন, এটা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজের কাছে কেউ থাকতে চাচ্ছে না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীকে পাওয়া যায় না; তাঁদের নাটাই ঢাকায়, কিন্তু সুতা কাটা যাচ্ছে না। প্রশাসনের অনেক বিধি অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকেরা এসব করেছেন, যার এখন কোনো বাস্তবতা নেই। কিন্তু অনেক দুষ্টু আমলা এসব বিধান চাতুরীর সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে এসব বদলানোর, তা সত্ত্বেও এসব পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। আইনকে আইন দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি’।

অবকাঠামোকে দেশের প্রাণ উল্লেখ করেন তিনি বলেন, অবকাঠামো আমাদের মূল লক্ষ্য। এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দেশের গ্রামীণ এলাকায় সড়কের নিচ দিয়ে আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা আছে, যাতে কৃষক নির্বিঘ্নে গরু নিয়ে রাস্তা পেরোতে পারেন।

প্রকল্প বাস্তবায়নে অপচয় হচ্ছে উল্লেখ করেন আব্দুস শহীদ বলেন, অনেক প্রকল্পের পরিচালকেরা নতুন গাড়ি কিনছেন, যদিও তিনি এমনতিই গাড়ি পান। এমনকি প্রকল্প এলাকায় তাকে প্রতিদিন যেতে হয় না। ফলে যেখানে তেলের দাম নিলেই যথেষ্ট, সেখানে তারা নতুন গাড়ি কিনছেন। এসব বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এছাড়া সংসদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটিগুলো শক্তিশালী করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। কোন প্রকল্প কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ কমিটির বৈঠকে পেশ করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা দেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু আমাদের জন্য বড় নজির, যা নির্ধারিত (বর্ধিত) সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আরও বেশ কটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য আছে সরকারের। কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে এগুলো সুশাসনের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ওইসিডির কাঠামো অনুসরণ করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.