চলতি ২০২১-২২ করবর্ষের ১১ মাসে (জুলাই-মে) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আহরণে প্রায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এ সময়ে আয়কর, স্থানীয় পর্যায়ের মূল্য সংযোজন কর (মূসক) এবং আমদানি-রপ্তানি শুল্ক মিলে মোট রাজস্ব আহরণ করেছে দুই লাখ ৫২ হাজার ৯২০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গত একই সময়ে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল দুই লাখ ২০ হাজার ৭২ কোটি টাকা। এ হিসেবে চলতি করবর্ষের প্রথম ১১ মাসে আগের করবর্ষের একই সময়ের চেয়ে ৩২ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা বা ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পেরেছে এনবিআর।
এনবিআর সূত্র জানায়, খাতভিত্তিক রাজস্ব আয়ের হিসাব অনুযায়ী ১১ মাসে আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক খাত থেকে আয় হয়েছে ৮০ হাজার ৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, স্থানীয় পর্যায়ে মূসক থেকে ৯৫ হাজার ১৪ কোটি ৬৬ লাখ এবং আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে ৭৭ হাজার ২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তবে এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আয় কিছুটা পিছিয়ে আছে। ১১ মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে এনবিআর সদস্য ড. আব্দুল মান্নান শিকদার বাসসকে বলেন,আগের তুলনায় ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি করদাতাদের মানসিকতায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। তারা প্রতিনিয়ত কমপ্লায়েন্ট হচ্ছেন।পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কর কর্মকর্তারা তাদের মনিটারিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে।এসব মিলিয়ে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে ভাল প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আয়কর ও মূসক রাজস্ব আয় বৃদ্ধি-দেশের সামগ্রিক সুশাসন উন্নতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভাল দিক।
মান্নান শিকদার বলেন, আমদানি-রপ্তানি শুল্ক ব্যবস্থায় কর ফাঁকি বন্ধে এনবিআর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। একইসাথে ব্যবসায়ীরা অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহন করায় মূসক কর প্রদানের ক্ষেত্রে তারা এখন অনেক বেশি কমপ্লায়েন্ট। উৎসে কর ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে জমাদানের পদ্ধতি চালু হওয়ায় সেটাও রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, চলতি জুন মাসে রাজস্ব আয় আগের বছরের তুলনায় আরও ভাল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এনবিআর জানায়, গত ২০২০-২১ করবর্ষের প্রথম ১১ মাসে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক থেকে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ১০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা চলতি করবর্ষের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এ সময়ে আয়কর আহরণ বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। গত করবর্ষের ১১ মাসে এ খাত থেকে রাজস্ব আয় ছিল ৬৫ হাজার ৭০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, এবার আয় হয়েছে ৭৭ হাজার ২৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। শুল্ক ও আয়করের মত মূসক রাজস্ব আয়েও উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এক্ষেত্রে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। গত করবর্ষের ১১ মাসে মূসক রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ২৬ কোটি টাকা। এবার আয় হয়েছে ৯৫ হাজার ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, চলতি করবর্ষে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
বাসস
			
						

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.