বন্যার্ত এলাকায় ঋণ বিতরণ বাড়ানোর নির্দেশ

বন্যা কবলিত এলাকায় ঋণ আদায় না করে বিতরণ আরো বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এখন ওই এলাকা থেকে ঋণের অর্থ আদায়ের কোনো প্রশ্নই আসে না। তাদের আরও নতুন ঋণ দেন। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক দেখবে।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলা সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় এক সেমিনারে গভর্নর এ নির্দেশ দেন। ‘বাংলাদেশ মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নে প্রতিরোধ কার্যক্রমের ২০ বছর’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

অনুষ্ঠানে বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, সিলেটের কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করুক বা না করুক তাদেরকে ঋণ বিতরণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংকের সিএসআর তহবিল থেকে বন্যার্তদের ব্যয়ের জন্য নির্দেশনাও দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, রোববার (১৯ জুন) বন্যা কবলিত এলাকায় সব ব্যাংকের শাখা আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নিকটবর্তী শাখা থেকে জরুরি ব্যাংকিং সেবা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে গতকাল শনিবার থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কারণ এরই মধ্যে এসব এলাকার বেশিরভাগ শাখা, এটিএম বুথ পানির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।

সব তফসিলী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, রংপুর ও কুড়িগ্রামসহ অন্যান্য কয়েকটি জেলায় নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকের যে সব শাখা বা উপশাখা বন্যাজনিত কারণে স্বাভাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না, সে সব শাখা বন্ধ রেখে গ্রাহকদেরকে নিকটবর্তী শাখা থেকে জরুরি ব্যাংকিং সেবা দিতে হবে।

এতে বলা হয়, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর অনতিবিলম্বে গ্রাহকদেরকে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ দুই জেলায় স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা দেখা দিয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে দুই জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ।

বেশিরভাগ এলাকার সঙ্গে সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আটকে আছে। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে বন্যাদুর্গত এলাকায়। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে পানি প্রবেশ করায় সেবাদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অসুস্থ অনেক মানুষকে যানবাহনের অভাবে হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। শহর ও গ্রামের প্রায় সব সড়ক পানির নিচে ডুবে আছে।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.