প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট। দ্বিতীয় ইনিংসে সবমিলিয়ে ২৪৫ রান। অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের এমন ব্যাটিং প্রদর্শনীতে একেইবারেই হতাশ রাসেল ডমিঙ্গো। প্রথম ইনিংসে দলীয় ভরাডুবির পর দ্বিতীয় ইনিংসে যথাক্রমে ৬৩ ও ৬৪ রানের ইনিংসে খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। এমন ইনিংসও মন ভরাতে পারেনি ডমিঙ্গোর। তার মনে, অন্তত একটি সেঞ্চুরি ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারত।
১০৯ রানে ছয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তারপর সাকিব-সোহানের জুটিতে বাংলাদেশ পায় ১২৩ রান। কেমার রোচের দ্বিতীয় নতুন বলে সাকিব শর্ট এক্সট্রা কাভারে প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। বাংলাদেশ সপ্তম উইকেটটি হারায় ২৩২ রানে। অধিনায়ক বিদায় নিলে খেই হারিয়ে সেই রোচের কাছেই উইকেট হারান সোহান। বাংলাদেশ অলআউট হয় ২৪৫ রানে! ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৮৪ রানের।
ডমিঙ্গো বলেন, ‘ওরা দুজন ভালো ব্যাটিং করেছে। ঝুঁকি কম নিয়ে খেলেছে। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দেখিয়েছে ওদের কী করা উচিত ছিল। কিন্তু নতুন বল দুজনকেই আউট করেছে। ৬০ রানের ইনিংস আমাদের টেস্ট জেতাবে না। আমাদের সেঞ্চুরি করতে হবে। দুজন ৬০ রানের ইনিংস খেলেছে। দুজনের কেউই সেঞ্চুরি করেনি। এটাই মূল কথা। ভালো না (দলের সার্বিক ব্যাটিং নিয়ে)। দুই ইনিংসেই অনেকে আলগা শট, অনেক বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথম ইনিংসে ১০৩ রান, অবশ্যই এর চেয়ে বেশি রান করা উচিত। দ্বিতীয় ইনিংসেও ২৪৫ রানের চেয়ে বেশি রান করা যেত। এটাই শেষ কথা, অনেক বেশি আলগা শট খেলেছি আমরা।’
মূলত ডমিঙ্গোর হতাশা দলের টপ অর্ডারে খেলা ব্যাটারদের ওপর। ম্যাচের পর ম্যাচে ব্যর্থ হয়ে চলেছেন মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্তরা। তুলনামূলক ভালো শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারছেন না অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল বা এই টেস্টের আগেও দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাসরা। আর আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় কখনো শুন্য রান করছেন, কখনো বিশুদ্ধ ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটাচ্ছেন বাজে শট খেলে। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সাকিব। এর মধ্যে কয়েকটি হাফ সেঞ্চুরি পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি।
সবমিলিয়ে হতাশাই দেখা যাচ্ছে হেড কোচ ডমিঙ্গোর চোখে মুখে। ডমিঙ্গো আরও বলেন, ‘ব্যাটসম্যানরা সবাই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগছে। আমাদের বড় বড় ব্যাটসম্যান যারা আছে, মুমিনুল, শান্ত (নাজমুল)—অনেকেই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে আছে। ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাস অনেক বড় ব্যাপার। এই মুহূর্তে ছেলেদের ব্যাটিংয়ে কোনো আত্মবিশ্বাস নেই। ব্যাটসম্যানদের এই অবনমন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফর্মে আসতে গেলে মানসিক দিক দিয়ে শক্ত হতে হবে। এ ম্যাচে এবং পরেরটির মধ্যে টেকনিক্যাল পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। সব রকমের বাড়তি আওয়াজ, সমালোচনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ক্রিকেট বল খেলার দিকেই নজর দিতে হবে। হ্যাঁ, এগুলো করার চেয়ে বলা সহজ। তবে সেরা খেলোয়াড়েরা এ সব করার সামর্থ্য রাখে।’
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.