অর্থবছরের ১০ মাসে জব্দ করা হয়েছে ৮৬৬ কোটি টাকা

বিএফআইইউর প্রতিবেদন

বর্তমানে মানি লন্ডারিং সংশ্লিষ্ট মামলার পরিমাণ বাড়ার সাথে বাড়ছে জব্দ ও বাজেয়াপ্তকৃত অর্থের পরিমাণ। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম ১০ মাসে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)’র প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্তাধীন নয়টি মামলার বিপরীতে ৮৬৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। একই সময়ে চারটি তদন্তাধীন মামলার বিপরীতে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২৭ কোটি ২১ লাখ টাকা।

বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করে বিএফআইইউ।

শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিএফআইইউ এর ‘বাংলাদেশে অর্থ-পাচার ও সন্ত্রাসীকার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রমের ২০ বছর’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিএফআইইউ অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামাল হোসেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের (২০২০-২১) অর্থবছরে সাতটি মামলার বিপরীতে ক্রোককৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আর বাজেয়াপ্তকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

গত ৬ অর্থবছরে ৬৩টি তদন্তাধীন মামলার বিপরীতে ক্রোককৃত অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। গত পাঁচ অর্থবছরে বাজেয়াপ্তকৃত অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। যা সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে।

বিএফআইইউ অতিরিক্ত পরিচালক মো. কামাল হোসেন বলেন, দেশের মানুষের আর্থিক স্বাক্ষরতা বাড়ায় আর্থিক খাতের অনিয়মসমূহ সহজে চিহ্নিত করা এবং বিচারের মুখোমুখি করা সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে বর্তমানে মানি লন্ডারিং সংশ্লিষ্ট মামলার পরিমাণ বাড়ার সাথে বাড়ছে জব্দ ও বাজেয়াপ্তকৃত অর্থের পরিমাণ।

বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ বিষয়ে জানতে সুইস অথোরিটির কাছে প্রতিবারের মতো এবারো তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে বিএফআইইউ।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকে থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অথর্ের বিষয়ে ২০১৪ সাল থেকে তথ্য প্রকাশ করে আসছে ব্যাংকটি।

তিনি বলেন, পাচার করা অর্থ উদ্ধার জটিল কাজ। বিভিন্য সময়ে বাংলাদেশের ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পকে তথ্য পেয়েছে বিএফআইইউ সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছ থেকে। সেই তথ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুদক ও তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে।”

সেমিনারে জানানো হয়, এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ৮০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সমপর্কে আথর্িক তথ্য সংগ্রহ করেছে বিএফআইইউ।
বাংলাদেশ থেকে মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, হংকং, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও ইউরোপের দেশগুলোতে অর্থপাচার হয় বলে সেমিনারে জানানো হয়।

বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্ব সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.