অবশেষে আমিনুর রহমানের বিভাগ পরিবর্তন

অবশেষে পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে এমন নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অতিরিক্ত পরিচালক আমিনুর রহমানের বিভাগ পরিবর্তন করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৯ বছর একই বিভাগে থাকার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে তাকে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-বদলি/বহালসংক্রান্ত এক চিঠিতে আমিনুর রহমানকে ডিপার্টমেন্ট অফ অফসাইট সুপারভিশন থেকে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে বদলি করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব পরিবর্তনের আগে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩ জুলাই। পরদিন দায়িত্ব নেবেন নতুন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, যিনি বর্তমান অর্থ সচিব।

নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে, যার মধ্যে পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করছে আমিনুরের বিষয়টি। কেননা তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সব বিষয় দেখভাল করতেন, যা পুঁজিবাজারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ছিল।

কয়েক বছর ধরেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা ছিল যে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল ভূমিকা পালন করছে। প্রায়ই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে, যা বাজারের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে ধীরগতির পেছনে যেসব কারণ উঠে এসেছিল তার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মধ্যে মতদ্বৈততার বিষয়টি সামনে এসেছে। পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে দুই সংস্থা সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেবে- ২০১৪ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায়ই নানা সময় একক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা নিয়ে বিএসইসি একাধিকবার প্রকাশ্যেই তাদের অসন্তোষ জানিয়েছে। বিশেষ করে আমিনুরের বিষয়ে বিএসইসির উচ্চ পর্যায়ের পক্ষ থেকেও নানা সময়ে নানা অভিযোগ রয়েছে।

পুঁজিবাজারে প্রভাব ফেলে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমিনুর রহমানের ভূমিকা ছিল। বাজার চাঙা করতে সম্প্রতি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে যেসব প্রস্তাব ও পরামর্শ দেয়া হয়, তার মধ্যে একটি ছিল আমিনুরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া।

নানা সময় আমিনুরের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসতে জোর দাবি জানিয়েছিল বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনোয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

আমিনুরের দপ্তর বদলের পরদিনই পুঁজিবাজারে দেখা গেছে চাঙাভাব। এদিন ৫১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটির ঘর। গত ১১ মের পর সর্বোচ্চ লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশের পর থেকে পুঁজিবাজারে তিন দিনে ১১৮ পয়েন্ট দরপতন হয়েছিল।

 

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.