আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের পদত্যাগ

বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) তিনি অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

আইডিআরএ চেয়ারমানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তার বিরুদ্ধে ৪০ কোটি ৮১ লাখ টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বলে সম্প্রতি আদালতে জমা দেওয়া এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে সংস্থাটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ জুন দুদক থেকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আইডিআরএ চেয়ারম্যানের কাছে সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে দুদকের কাছে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে বলা হয়েছে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গেছে তার অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত অভিযোগ। একদিকে তিনি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) কোটা সুবিধা নিয়ে শেয়ার কিনেন; অন্যদিকে তিনি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান হয়েও বিভিন্ন বীমা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন। এমন কিছু কোম্পানির শেয়ারে তার বিনিয়োগ ছিল, যেগুলোর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল এবং এই দর বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি বেড়েছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

আইডিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ  হোসেনের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে জমা দেওয়া বিএফআইইউর তথ্যে এসব প্রতিবেদনের সত্যতা মিলেছে।

জানা গেছে, আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী নামের একজন বিনিয়োগকারী ড. মোশাররফের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা করলে আদালত বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিএফআইইউকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই প্রতিবেদন দেয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, মোশাররফ হোসেনের নিজের ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৫টি ব্যাংকে ৩০টি অ্যাকাউন্ট পরিচালনার তথ্য পেয়েছে বিআইএফইউ। এরমধ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৮টি অ্যাকাউন্টে এই টাকা জমা হয়েছে।এক্ষেত্রে আয় ও ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি নেই।

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.