১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবেন ৫০ লাখ মানুষ

২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৫ টাকা কেজি দরে ৫০ লাখ মানুষকে চাল দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি এ প্রস্তাব করেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থাসহ সার্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল একপ্রকার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল। এ সময় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বিশ্বে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্কবাণী প্রদান করেছিল। বাংলাদেশে কৃষিখাতের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে আমাদের সরকার প্রথম থেকেই সতর্ক ছিল।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সত্ত্বেও আমরা দেশে কৃষির উৎপাদনধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। চালের বাজারদর নিয়ন্ত্রণসহ স্বল্প-আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য প্রাপ্তি সহজলভ্য করার লক্ষ্যে আমরা ওএমএস কার্যক্রমের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে সুলভমূল্যে চাল ও আটা বিক্রি করেছি।

‘চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরেও এ কর্মসূচিতে ৫.৭০ লাখ মে. টন চাল ও ৪.৮৫ লাখ মে. টন গমের ফলিত আটা বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। ৫০ লক্ষ নিম্ন-আয়ের পরিবারকে বছরে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল, অর্থাৎ ৫ মাসব্যাপী ১৫ টাকা কেজি দরে পরিবারপ্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল বিতরণপূর্বক খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হবে।’ যোগ করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় চাল-গমের ক্রয়-বিক্রয় ব্যবস্থা অব্যাহত রাখব। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে খাদ্যশস্য সংগ্রহের জন্য আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি ৩১ দশমিক ৪২ লাখ টন। অন্যদিকে একই সময়ে খাদ্যশস্য বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩০ দশমিক ৯৫ লাখ টন।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। আমরা আশা করছি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা ২৫ লাখ টনে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এছাড়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী খাদ্যশস্য সংরক্ষণ ক্ষমতা ৩৭ লাখ টনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

তিনি বলেন, খাদ্যশস্যের সংরক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদ্যমান গুদামসমূহের ধারণক্ষমতা বজায় রাখার লক্ষ্যে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। আলুর বাম্পার উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষকগণ যাতে স্বল্পমেয়াদে (৩-৪ মাস) ও সাশ্রয়ী ব্যয়ে তা সংরক্ষণ করতে পারে, সে লক্ষ্যে সরকার বাস্তুভিটাতেই ক্ষুদ্র আকৃতির (২৫ ফুট লম্বা ও ১৫ ফুট প্রস্থের) ‘প্রাকৃতিক আলু সংরক্ষণাগার’ স্থাপনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.