টিপু হত্যা: ‘মাস্টারমাইন্ড’ মুসা ওমানে গ্রেপ্তার

রাজধানীর শাহজাহানপুর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও পথচারী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ সুমন শিকদার অরফে মুসা ওমানে গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এআইজি মহিউল ইসলাম বলেন, ওমান পুলিশ ও আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল মুসাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আমাদের। পুলিশের পক্ষ থেকে ওমানের হাইকমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাকে ওমান থেকে ফেরত আনার বিষয়ে প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ মামলার তদন্তে মুসার নাম আসার পর তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের হয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ডেস্ক। পরে বেশ কিছুদিন ধরে মুসা সে দেশের গোয়েন্দা বাহিনীর নজর দারিতে ছিল।

বাংলাদেশ পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মুসা ওমানে গ্রেপ্তার হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনতে ওই দেশের সঙ্গে সার্বাক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে একটা বাধা, ওমানের সঙ্গে আমাদের আসামি দেওয়া-নেওয়ার চুক্তি না থাকায় আমরা পুলিশের একটি দল পাঠানোর বিষয়ে চিন্তা করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।

নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা ইসলাম ডলি বলেন, মুসার ওমানে গ্রেপ্তারের বিষয়টি শুনলাম। মুসা যখন গ্রেপ্তার হয়েছে তখন হয়ত স্বামী হত্যার বিচার পাবো। তবে এখনও সন্দিহান তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে। মুসা যেহেতু গ্রেপ্তার হয়েছে, তাতে আমি আশ্বস্ত হয়েছি বিচার পাবো।

এর আগে, র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছিলেন, রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। টিপু হত্যাকাণ্ডের ঠিক ১২ দিন আগে দুবাই চলে যান মুসা। দুবাই বসে হত্যার পুরো ছক কষেন তিনি। টিপুকে হত্যায় চুক্তি হয় ১৫ লাখ টাকা। এই ১৫ লাখ টাকা কে কত দেবে তাও ভাগ করে দেন মুসা। নয় লাখ টাকা দেন ওমর ফারুক। অবশিষ্ট ছয় লাখ টাকা দেন গ্রেফতার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ ও মুসা।

তিনি বলেন, দুবাই যাওয়ার আগে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে যান মুসা, হুন্ডির মাধ্যমে আরও চার লাখ টাকা মুসাকে দেওয়া হয়। বাকি ছয় লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়। ছয় লাখের মধ্যে র‍্যাব গ্রেফতারের সময় তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা জব্দ করে। দুবাই থাকা মুসা ২০১৬ সালে রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটভুক্ত ৩ নম্বর আসামি।

গত ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর আমতলা এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা এক দুর্বৃত্ত যানজটে আটকে পড়া টিপুর গাড়ির কাছে এসে তাকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান টিপু। ওই সময় টিপুর গাড়ির পাশে থাকা রিকশার আরোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন ২৫ মার্চ টিপুর স্ত্রী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদি হয়ে অজ্ঞতনামা একটি হত্যা মামলা করেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.