কুমিল্লায় সাত দিন আগে নিখোঁজ হওয়া চার বোনকে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পরিবার। পিবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ জুন) সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে নিখোঁজ হয়েছিল চার বোন। উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের কালেম গ্রামের মজিবুল হক। তার চার কন্যা তাসনিম জাহান (১৭), মারজাহান (১৪), তাজিন সুলতানা (১২) ও মাইশা সুলতানা (৬)। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে তাসনিম উপজেলা সদরের আফসারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মারজাহান একই মাদ্রাসার দাখিল দশম শ্রেণি ও তাজিন সুলতানা ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাইশা নারুয়া তালিমুল কোরআন মডেল মাদ্রাসার শিশু শ্রেণিতে পড়ে।
প্রবাস ফেরত মজিবুল হক বিভিন্ন ব্যক্তিকে ১২ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আর ফেরত পাননি। এ অবস্থায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। মজিবুল হক রাগের মাথায় মেয়েদের বলেছিলেন বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। তখন বড় মেয়ে জানতে চান, বের হয়ে গেলে খুঁজতে যাবেন কি না? বাবা তখন না-সূচক জবাব দেন। এর পর ছোট তিন বোনকে নিয়ে বের হয়ে যান তাসনিম জাহান। পরে ২৮ মে রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বাবা।
তাসনিমের মামা এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান জানান, মজিবুল হক ১৮ বছর বিদেশে ছিলেন। দেশে ফেরার পর তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্যবসার জন্য ১২ লাখ টাকা দেন। কিন্তু সেসব টাকা তিনি ফেরত পাননি। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন মজিবুল। এ ছাড়া তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ রয়েছে। এমন অবস্থায় তিনি বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী-সন্তানদের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বকাবকি করেন। গত ২৫ মে তিনি মেয়েদের বেশি বকাঝকা করেন। একপর্যায়ে তিনি তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এরপর মারজাহান ও তাজিন সুলতানা ওইদিন বিকেলে পার্শ্ববর্তী নারুয়া গ্রামে নানার বাড়ি যায়। পরদিন সকালে তাসনিম জাহানও ছোট বোন মাইশাকে নিয়ে নানার বাড়ি আসেন। এরপর তাসনিম মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে তিন বোনকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু মামা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মাদ্রাসায় গিয়ে জানতে পারেন তারা সেখানে যায়নি। বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও তাসনিমের বান্ধবীদের বাড়িতে খোঁজ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.