ওটিসির কোম্পানি কিনছেন সাকিব আল হাসান

পুঁজিবাজারে অতি দুর্বল কোম্পানির জন্য নির্ধারিত বিকল্প মার্কেট ওভার দ্যা কাউন্টার (ওটিসি) এর কোম্পানি কিনছেন ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান। সাকিবের মালিকানার দুই প্রতিষ্ঠান আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের ওই কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার কিনবে। ক্রেতার তালিকায় আছেন আরও ৫ ব্যক্তি। সবাই মিলে কোম্পানিটির ৪৮.১৭৫ শতাংশ শেয়ার কিনবেন। আল-আমিন কেমিক্যালের প্রধান দুই উদ্যোক্তা এই শেয়ার বিক্রি করবেন।

সোমবার (৩০ মে) পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আলোচিন শেয়ার অধিগ্রহণ তথা কেনার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে।

কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাকিবের দুইটি প্রতিষ্ঠান ও পাঁচ ব্যক্তির কাছে এতো বড় পরিমাণের শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে কোম্পানির সমস্ত শেয়ার স্থানান্তর কার্যকর করার পর অবিলম্বে সকল শেয়ারকে ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তরিত করতে হবে।

তথ্য মতে, সাকিবের প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে মোনার্ক মার্ট (জাভেদ এ মতিন প্রতিনিধিত্বকারী) ২.৪০ শতাংশ এবং মোনার্ক এক্সপ্রেস ৪.৮০ শতাংশ আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কিনবেন। এ ছাড়া আমিনুল ইসলাম সিকদার এবং মো. খায়রুল বাশার (ইশাল কমিউনিকেশনের প্রতিনিধিত্বকারী) ১৪.৪ শতাংশ, এএফএম রফিকুজ্জামান ১০ শতাংশ, মাশুক আলম ৬ শতাংশ, মো. হুমায়ুন কবির (লাভা ইলেকট্রোডস ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিনিধিত্বকারী) ২.৪০ শতাংশ এবং মুন্সী শফিউদ্দিন ৮.১৭৫ শতাংশ আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কিনবেন।

এদিকে, কোম্পানিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ আশিক ১৮.৪০ শতাংশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আতিকা ১৫.৯৭৫ শতাংশ ও তাজাক্কা তানজিম ১৩.৮০ শতাংশ শেয়ার ওই দুই প্রতিষ্ঠান ও পাঁচ ব্যক্তির কাছে বিক্রি করবেন।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মোট ২৪ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ টি শেয়ার, যা কোম্পানির মোট শেয়ারের ৪৮.১৮ শতাংশ চিঠিতে উল্লেখিত ক্রেতা ও কোম্পানির কাছে উল্লেখিত শর্তাবলী মেনে চলার সাপেক্ষে বিক্রি বা স্থানান্তর করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

শর্ত অনুসারে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকদেরকে সম্মিলিতভাবে মোট শেয়ারের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। কোম্পানি নতুন শেয়ারহোল্ডারদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করবে। আর প্রত্যেক পরিচালকের কমপক্ষে ২ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে।

পরিচালনা পর্ষদের পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত কোম্পানিটির আরো মূলধন বাড়াতে পারবে না। প্রস্তাবিত শেয়ারের ক্রেতারা বন্ধ থাকা কোম্পানিটির কারখানায় পুনরায় উৎপাদন শুরু করবে। আর অধিগ্রহণ শেষ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রমসহ সমস্ত মুলতবি বিষয়গুলোকে নিয়মিত করবে। প্রস্তাবিত ক্রেতা/শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোম্পানিতে নতুন তহবিল বিনিয়োগ করবে। পৃথক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তাদের বিপরীতে মূলধন প্রদান কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে হবে।

কোম্পানির সমস্ত শেয়ার স্থানান্তর কার্যকর করার পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সব শেয়ারকে ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তরিত করতে হবে।

উল্লেখ, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ বর্তমানে পুঁজিবাজারের ওটিসি একটি তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে সম্প্রতি বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। তাই আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে কোম্পানিটিকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

আল-আমিন কেমিক্যাল ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫০ লাখ। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৫০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২.৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৭.৪৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১৫ টাকায় লেনদেন হয়েছে। তবে সেই লেনদেনটি ঠিক কবে হয়েছে কোনো সূত্র থেকে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ।

আল-আমিন কেমিক্যাল মূলত বার্নিশ ও তারপিন জাতীয় পণ্য উৎপাদন করে থাকে। ফরিদপুরের বিসিক শিল্পনগরীতে এর কারখানা। কোম্পানিটির পুঞ্জিভুত লোকসান ৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আর শেয়ার প্রতি নিট দায় ৪ টাকা ৬৯ পয়সা।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.