সিলেটের বন্যা পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে

সিলেটের বন্যা পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়েছে জেলার কয়েক হাজার মানুষ। রাস্তা-ঘাট ভেঙে চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাকবলিত মানুষেরা। বাড়িতে খাবার কিংবা বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে জেলার কয়েক লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ছেই, কমছে না। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে গেছে উচ্চ ফলনশীল বোরো ধান, কৃষি ফসল।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী- গতকাল সারা দিন সিলেটে মাত্র ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হলেও সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভা ও ধলাই নদীতে পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে কেবল সিলেট নগরেই ৪৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন ভুতুড়ে অবস্থায় রয়েছেন। এসব এলাকায় মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, বরইকান্দি সাবস্টেশন ও শাহজালাল উপশহরে একটি ফিডার পানির নিচে চলে যাওয়ায় এগুলো বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বরইকান্দি সাবস্টেশনের অধীনে ৪০ হাজার গ্রাহক ও শাহজালাল উপশহরের একটি ফিডারের অধীনে ৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী জানান, বাড়িঘরে পানি ওঠায় কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, সদর ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কিছু জায়গায় সাবস্টেশনের যন্ত্রপাতি পানিতে তলিয়ে গেছে। আবার অনেক জায়গার বাসাবাড়ির মিটার পর্যন্ত ডুবে গেছে। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। পানি না কমলে এটি স্বাভাবিক হবে না।

এ ছাড়া জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী ২৩ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হবে, যার কারণে বাড়বে পানি, ভয়াবহ হয়ে উঠবে বন্যা পরিস্থিতি।

এদিকে, সিলেট সদর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলছে। জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে সবকটিতেই বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এর মধ্যে প্রথম দিকে যে ছয়টি উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে, সেসব উপজেলায় কান্নার রোল পড়েছে। এসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালায় থেকে বরাদ্দ করা নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তুলনায় নগন্য বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.