রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থার অবনতি

রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তারা কোমর, মাথা, হাত-পা এবং পিঠে ব্যথাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। আগের বছরগুলোতে পরিচালিত জরিপে দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের পর্যায়ক্রমে উন্নতি পরিলক্ষিত হলেও চলতি বছর অবনতি ঘটেছে।

সম্প্রতি একশন এইডের এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বেঁচে যাওয়া ২০০ জনের মধ্যে একশন এইড বাংলাদেশ এই জরিপ কাজ পরিচালনা করেছে।

জরিপ অনুযায়ী, ৫৬.৫ শতাংশ বলেছেন যে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১৪ শতাংশ। জরিপে আরো উঠে আসে, ৩৩ শতাংশের অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ১০.৫ শতাংশের অবস্থা সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে।

গতবছর যেখানে মানসিক ট্রমায় আক্রান্ত ছিলেন ১২.৫ শতাংশ, এবছর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮.৫ শতাংশে। ৩১ শতাংশ বলেছেন তাদের মানসিক অবস্থা প্রায় স্থিতিশীল এবং ২০.৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল।

রানা প্লাজায় দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৫৩ শতাংশ এবং ৪৭ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানে নিযুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ বলেছেন শারীরিক অক্ষমতার কারণে তারা কাজ করতে পারেন না এবং ১০ শতাংশ এখনও মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। আহত শ্রমিকদের মধ্যে ঘন ঘন কাজ পরিবর্তন করার প্রবণতা দেখা গেছে যার কারণ হিসেবে শারীরিক সীমাবদ্ধতার জন্য দীর্ঘ সময় একই ধরনের কাজ করার অক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে।

জরিপ অনুসারে, ১৪.৫ শতাংশ তাদের আদি পেশা গার্মেন্টসে ফিরে গেছেন এবং আরও ৮ শতাংশ টেইলারিংয়ের সাথে জড়িত আছেন। অনেকেই তাদের পেশা বদলে গৃহকর্ম, দিনমজুরি, কৃষিকাজ, বিক্রয় এবং গাড়ি চালানোর মতো পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন ৷

জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগের আয় করোনা মহামারির প্রভাবে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৬৩.৫ শতাংশ বলেছেন, যে মহামারি চলাকালীন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে ছিল না। ৫১.৫ শতাংশ বলেছেন তারা নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন নি, এবং ২২.৫ শতাংশ বলেছেন তারা সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে পারেননি। ৪৬.৫ শতাংশকে মহামারি চলাকালীন তাদের পরিবারের খাবার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ঋণ করতে হয়েছে।

জরিপে প্রাপ্ত তথ্য মতে, দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ৩৬ শতাংশের পারিবারিক আয় ৫ হাজার টাকার কম এবং ৩৪ শতাংশের ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পারিবারিক আয় রয়েছে৷ ৩৫ শতাংশ বলেছেন যে তাদের মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকার বেশি এবং ৩০ শতাংশের ১৫ হাজার টাকারও বেশি যার অধিকাংশই খরচ হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়,বাসা ভাড়া, সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.