রুশ হামলায় তছনছ মারিউপোল শহর

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের আরেকটি শহর মারিউপোল। রুশ সেনাদের মাত্র ছয় সপ্তাহের অতর্কিত হামলায় তছনছ এই শহরটি এখন প্রায় রাশিয়া দখলে। সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিবিসির রিপোর্টে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, ইউক্রেনিয় যোদ্ধারা রুশ বাহিনীকে ঠেকাতে আত্মগোপন করে আছে। একে অপরের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে। তারা গোপন করে আছে এ জন্য যে, রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা যাতে দাবি করতে না পারে মারিউপোল পুরোটাই এখন রাশিয়ার কবজায়।

সূত্রে জানা গেছে, ইউক্রেন যোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে। এ কারনে তাদেরকে পিছুটান হতে হচ্ছে। অদৃষ্টের পরিহাসের কারণে খুব সম্ভবত শহরটির নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার কাছে চলে যাবে। কেননা রাশিয়া শহরটির পূর্ব ও দক্ষিণ প্রধান দু’দিক থেকেই সেনা বাড়াতে শুরু করেছে যা পুতিনের জন্য কৌশলগত বিজয়।

গত মাসের শুরুর দিকে রুশসেনারা শহরটিকে চারদিক থেকে ঘেরাও করতে শুরু করলে হাজার হাজার লোক প্রাণভয়ে উত্তরদিকে ছুটতে থাকে। অনেকেই অবরোধকৃত ভূখন্ডেই আটকে পড়ে। তাদের অনেককেই হত্যাও করা হয়। এমনটিই প্রত্যক্ষ করেছে জাপোরিঝঝিয়া নামে এক ইউক্রেনিয় নাগরিক।

যুদ্ধ পর্যালোচনাকারী প্রতিষ্ঠান (আইএসডাব্লিউ) থিংক ট্যাঙ্ক জানাচ্ছে, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই রুশ বাহিনী দুভাগে বিভক্ত হয়ে মারিউপোল সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিবে।

ইউক্রেনের এক সেনা ভিডিও বার্তায় মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানাচ্ছেন, প্রতিজ্ঞা করছি তাদের শক্ত অবস্থান থাকা সত্ত্বেও আমরা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করব না। যখনি সম্ভব আমরা প্রতিটা শহরেই নিজেদের অবস্থান ধরে রাখব।

তিনি আরও জানান, বাস্তবতা হল এই যে, সমগ্র শহরটিই অবরুদ্ধ। চারিদিকেই রুশ সেনারা অবস্থান করছে। আমাদের কাছে থাকা গোলাবারুদ, খাবার ও পানীয় সরবরাহ আসছে না।

ইউক্রেনের রয়্যাল ইউনাইটে সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের সিনিয়র এক গবেষনাকর্মী জানান, আসলে শহরটিতে ইউক্রেন সেনাদের প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র ও খাবার সরবরাহ করার সুযোগ ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। জানি না তারা এভাবে করে কতদিন টিকে থাকবে।

রাশিয়ান ডিফেন্স মিনিস্টার দাবি করছে, তারা দু’সপ্তাহ আগে আঝব সমুদ্রতীর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে থাকা মি-৮ নামে একটি হেলিকপ্টার বিদ্ধস্ত করেছ। ভাবা হচ্ছিল যে হেলিকপ্টারটি শহরের বাহির থেকে আসছিল।

আজ মঙ্গলবার জানা গেল, ‘শ খানেক ইউক্রেনা সেনা গুপ্তস্থান থেকে বেরিয়ে প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করতে আসলে অর্ধেকেই রুশবাহিনীর আর্টিলারি ও আকাশ হামলায় মারা যায়। আর ৪০ জনের বেশি সেনা তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

এদিকে ইউক্রেনিয়ান প্রেসিডেন্ট জিলানাস্কি জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে (ভিডিও বার্তায়) জানালেন, সকল প্রকার আগ্রাসন প্রতিহত করার উপরেই নির্ভর করছে ইউক্রেনের আগামী ভবিষ্যৎ। আমার এ বার্তা হৃদয়ঙ্গম করা প্রত্যেক নাগরিকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যারা প্রতিরোধ করছেন না তাদের কাছে মনে হবে বিজয় এখনও অনেক দেরি। কিন্তু না যেহেতু রাত পোহালেই ভোর হয়।

অর্থসূচক/এইচডি/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.