ইমরান খানের ভাগ্য নির্ধারণী অধিবেশন শুরু

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণের জন্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অধিবেশন শুরু হয়েছে। শনিবার স্থানীয় সময় ২টার দিকে এ অধিবেশন শুরু হয়।

এর আগে কিছুক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পরেই স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কায়সার। কিন্তু সেই সময়ের পর দেড় ঘণ্টা পর অধিবেশনই পুনরায় শুরু হয়।

সকালে অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার আসাদ কায়সার বলেন, তিনি পার্লামেন্টে ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়ে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ নিয়ে বিতর্ক চান। তার এ ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে যথাসময়ে অনাস্থা ভোট হতে হবে। এরপর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি বক্তব্য শুরু করলে পার্লামেন্টে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ডেপুটি স্পিকার সাংবিধানিক প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যান করেননি। বরং ‘বিদেশি ষড়যন্ত্রের’ পরিপ্রেক্ষিতে অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা দরকার ছিল। তার এ কথার প্রতিবাদে পার্লামেন্টের ভেতর তুমুল স্লোগান দিতে শুরু করেন বিরোধীরা। পরে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার।

এর আগে সম্মান বাঁচানোর চেষ্টায় অনাস্থা ভোট এড়িয়ে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার কৌশল নিয়েছিলেন ইমরান খান। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট তা অবৈধ ঘোষণা করে আজ শনিবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসিয়ে অনাস্থা ভোটের নিষ্পত্তি করতে বলেন।

এখন পার্লামেন্টে সমর্থনের যে হিসাব-নিকাশ দাঁড়িয়েছে, তাতে অনাস্থার লজ্জা নিয়ে ইমরানের প্রস্থান হতে পারে। ভোটে হেরে গেলে ক্ষমতাচ্যুত হবেন তিনি। আর জিতলে, এ যাত্রায় শেষ রক্ষা হবে তাঁর।

এদিকে, ইমরান খানের সরকারের পতনের জন্য ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টের মধ্যে ১৭২ জনের সমর্থনের প্রয়োজন। বিরোধীরা বলছে, সে সমর্থন তাঁদের রয়েছে। পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল–এন) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনাস্থা প্রস্তাবে ১৭৪ আইনপ্রণেতার সমর্থন ছিল।

জাতীয় পরিষদের সচিবালয়ে গত ৭ মার্চ ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধীদলগুলো। এরপর ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার। প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য ৩ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়। পরে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বলেছিলেন, এ অনাস্থা প্রস্তাব পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এরপর ইমরানের আহ্বানে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এরপর ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নেন। এ ছাড়া বিরোধীরাও সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করে সুপ্রিম কোর্টে। এরপর অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.