জন্মদিনে ‘পলাতক’ আসামি নিয়ে থানায় কেক কাটার ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার

হত্যা চেষ্টা মামলার পলাতক আসামিদের সঙ্গে থানায় কেক কেটে জন্মদিন পালনের অভিযোগে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গণিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার বিকেল কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, ওসি মোহাম্মদ ওসমান গণিকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ২ মার্চ ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল ও মোহাম্মদ আলিফকে ‘ নিয়ে থানা ভবনে ওসির অফিস কক্ষে কেক কেটে ওসি ওসমান গণির জন্মদিন উদযাপনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড আইডি থেকে জন্মদিন উদযাপনের একটি ছবি পোস্ট করেন ‘পলাতক’ আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল। ছবিতে দেখা যায়, ওসি ওসমান গণি (আকাশি রঙের পাঞ্জাবি পরা) মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাম পাশে দাঁড়িয়ে আছেন কালো কোট রুবেল। আসামি আলিফসহ অন্যরা ওসির মুখে কেক তুলে দিচ্ছেন।

ওইদিন সন্ধ্যায় আরহান মাহমুদ রুবেল তার ফেসবুকে ওসি ওসমান গণিকে ট্যাগ করে একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ছোট্ট আয়োজনে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে (ওসি ওসমান)। আজকের এই শুভ জন্মদিনে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা রইল প্রিয় ভাই।’

অন্য আসামি আলিফও তার ফেসবুক আইডি থেকে ওসির জন্মদিনের ছবি পোস্ট করেন।

আদালত ও মামলার বাদীর সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শক্রতা এবং ছাত্রলীগে নিজেদের প্রভাব ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলের (২৪) নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি দল কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখম করে। সে সময় তারেকুলের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে তারা। এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই তানজীমুল ইসলাম বাদী হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামি করে চকরিয়া থানায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ৬ নম্বর আসামি করা হয় মোহাম্মদ আলিফকে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করা ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তখন ওসি ওসমান গণি বলেছিলেন, ‘কার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে আর কার বিরুদ্ধে নাই, সেটা তো আমরা জানি না। ওয়ারেন্ট যদি থেকে থাকে, আমরা তাদের ধরি। কারও কপালে তো ওয়ারেন্ট লেখা নাই। যদি তাদের নামে ওয়ারেন্ট থাকে, তাহলে গ্রেপ্তার করা হবে।’

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.