রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ দশম দিনে গড়িয়েছে এবং দু পক্ষের দ্বিতীয় দফা আলোচনাতেও কোন সমঝোতা হয়নি। আবার বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধের দাবি জোরালো হলেও তার দিকে নজর নেই কোন পক্ষেরই।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এ যুদ্ধের সূচনা করেছিলো রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন ইউক্রেনকে নেটোতে যোগদান থেকে বিরত রাখা ও দেশটিকে একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করাই তার লক্ষ্য।

বরং একদিকে কিয়েভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী আবার অন্যদিকে নেটো ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের ব্যাপক সহায়তায় তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছে ইউক্রেনীয়রা। কোন তরফ থেকে আপোষের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে যুদ্ধে কতজন বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়, কিন্তু জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর প্রায় ১২ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আরও কয়েক লাখ মানুষ এখন আশ্রয়ের সন্ধান করছেন।

রাশিয়ার দখলে যাওয়া প্রথম ইউক্রেনের শহর হচ্ছে খারসেন। কিয়েভ, খারকিভ লক্ষ্য করে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসা বিশাল একটি রাশিয়ান সেনা বহর পথে থেমে রয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মারিওপোলে অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়ার সৈন্যরা এবং আরেকটি বন্দর নগরী ওডেসার দিকে এগোচ্ছে। রাশিয়া এই দুইটি শহর দখল করতে পারলে ইউক্রেন সমুদ্র যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

শুক্রবার কয়েকঘণ্টা ধরে গোলাবর্ষণের পর জেপোরেঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিশ্ব নেতারা বলছেন, এই হামলা বিশ্বে একটি বড় বিপর্যয় তৈরি করতে পারে। বর্তমানে অকার্যকর চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র এর আগে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া। এখানেই ১৯৮৬ সালে পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল।

ইউক্রেনের আকাশে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করতে নেটো রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জলোনস্কি বলেছেন, ‘এখানে যত মানুষ মারা যাবে, তাদের জন্য আপনারাই দায়ী হবেন’।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক লক্ষ্য করে সম্পদ জব্দের একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর ফলে দেশটির বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ভ্রমণ বাধার মুখে পড়েছে।

রাশিয়ায় যুদ্ধ সংবাদ প্রকাশে সেন্সরশীপ আরোপ করে একটি নতুন আইন জারি করায় বিবিসি-সহ একাধিক গণমাধ্যম সেদেশে কার্যক্রম স্থগিত করেছে। অ্যাপল, স্যামসাং, এয়ারবিএনবিসহ একাধিক কোম্পানি রাশিয়ায় ব্যবসা স্থগিত করেছে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বিমান চলাচল স্থগিত করেছে একাধিক দেশ।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.