ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়

করোনা মহামারি ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছে দেশের অর্থনীতি। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যে এখনও মন্দা বিদ্যমান থাকায় ঋণ বিতরণের নীতিমালা আরও কিছুটা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে অভ্যন্তরীণ ঋণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার স্কোর (ক্রেডিট রেটিং) আরও নমনীয়ভাবে বিবেচনা করা হবে।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে এখনও বিরাজমান রয়েছে। এ পরিস্থিতি হতে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত ২০২০ এবং ২০২১ সালের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় স্থিতিশীল না থাকায় শিল্প/ব্যবসা/সার্ভিস সেক্টরের কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবরণীর চিত্র অপেক্ষাকৃত খারাপ/দুর্বল হওয়ায় নতুনভাবে ঋণ গ্রহণে অথবা পূর্বের ঋণ নবায়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানসমূহ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

এ প্রেক্ষিতে দেশব্যাপী ব্যবসায়িক কার্যক্রম ত্বরান্বিত ও আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে ব্যাংক ঋণ গ্রহীতাদের বিদ্যমান আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক হতে প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা গ্রহণ অথবা বিদ্যমান ঋণ নবায়ন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে এখন গ্রাহকদের বছর শেষে আর্থিক বিবরণী তৈরিতে কিছুটা ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, আর্থিক বিবরণীতে দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে আগের নিয়মে ৭৫ শতাংশের বেশি পেলে অতি উত্তম, ৬৫ শতাংশের বেশি থেকে ৭৫ শতাংশের কম পেলে ভালো, ৫৫ শতাংশের বেশি থেকে ৬৫ শতাংশের কম পেলে প্রান্তিক এবং ৫৫ শতাংশের কম পেলে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। তবে ৪৫ শতাংশের কম পেলে তিনি আর নতুন ঋণ পাবেন না।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে অতি উত্তম ও ভালো গ্রাহকদের ক্ষেত্রে একই মান রাখা হয়েছে। তবে প্রান্তিক ও অগ্রহণযোগ্য গ্রাহকদের ক্ষেত্রে নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই ৫ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশের বেশি থেকে ৬৫ শতাংশের কম পেলে প্রান্তিক এবং ৫০ শতাংশের কম পেলে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে গড়ে ৪০ শতাংশের কম পেলে তিনি আর ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন না।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অতি উত্তম গ্রাহকদের নতুন ঋণ দেয়া ও আগের খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে কোনো বাধা থাকবে না। ভালো গ্রাহকদের নতুন ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। প্রান্তিক গ্রাহকদের খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে সতর্ক হতে হবে। তাদের নতুন ঋণ দেয়া যাবে না। অগ্রহণযোগ্য গ্রাহকদের নতুন ঋণ দেয়া যাবে না। আগের খেলাপি ঋণ নবায়ন করা যাবে।

তবে কোনো গ্রাহক ৪০ শতাংশের কম পেলে তিনি অগ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবেন। তিনি নতুন ঋণ পাবেন না। আগের খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে পারবেন।

প্রজ্ঞাপনের বিধিবিধান এখন থেকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে। ফলে আগামী ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই বিধানটি বাতিল বলে গণ্য হবে। ওই দিন থেকে এর আগে এ বিষয়ে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিধিবিধান কার্যকর হবে।

অর্থসূচক/এমএস/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.